Share it

যীশু চৌধুরী: গত ২১ ডিসেম্বরে মঞ্চস্থ হল চৈত্রের কাফন নামে একটি নাটক। থিয়ে অসপেক্স মঞ্চে এই নাটক হাজির করেছিল ‘অলীক’। মূলত তারুণ্যের যন্ত্রণা নিয়েই এই নাটকের গল্প গড়ে উঠেছিল। বিপ্লবের চেতনা সম্পন্ন একটি যুবক সমস্ত কিছু ত্যাগ করে বেরিয়ে পড়েছিল মুক্তির সন্ধানে। মুক্তি মানে দেশ এবং জনগণের মুক্তি। স্বাভাবিক কারণে তাকে ভোগ করতে হয়েছে অকথ্য অত্যাচার এবং যন্ত্রণা। এই নাটকের অন্যতম চরিত্র একটি তরুণী সেও অত্যাচারিত হয়েছে ওই নায়কের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে। কিন্তু সেও কখনও ভেঙে পড়েনি।

অন্যদিকে মুক্তিকামী যুবকটি তার সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও মা বাবার বিশ্বাস থেকে সরেনি। তার মা বাবা তাকে পুরোপুরি ভরসা করতেন যে তাদের একমাত্র সন্তান নিশ্চয়ই একদিন মুক্তি নিয়ে আসবে। যদিও সেই ছেলে প্রাণ দিয়েছে তবু মুক্তির স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যায় নি। সেই অবিরত মুক্তির কাহিনি গড়ে তুলেছেন অভিনেতা অভিনেত্রীরা, তাঁদের আন্তরিক ও দক্ষ অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে। যাঁরা অভিনয় করেছেন তাঁদের মধ্যে আছেন অনিমেষ মান্না, ঐন্দ্রিলা চৌধুরী, শর্মিষ্ঠা রায় চক্রবর্তী, অনিমা সামন্ত, অনির্বাণ সামন্ত, সুদীপ দে সরকার এবং রাশি দে প্রমুখ। এই নাটকের পরিচালক অনিমেষ মান্না নিজেই ওই যুবকের বাবা হিসেবে যে সংযত অভিনয় করেছেন তা উল্লেখ করার মতো। নিজের অভিনয় ছাড়াও নাটকের নির্দেশক হিসেবে তিনি অন্যদের অভিনয়ও যথাযথ সংযমের মধ্যেই রাখতে সাহায্য করেছেন। এই নাটকের আগাগোড়া আলোর কাজ ভালোই, তবে আরেকটু তৎপর হলে ভালো হত। আলোয় শিল্প কর্ম করেছেন সৌরভ চক্রবর্তী। আবহ প্রক্ষেপন করেছেন সঞ্জীব মহারানা। তবে আবহ তৈরি করে দিয়েছেন নাট্য নির্দেশক নিজেই।

এই ধরনের নাটক দেখলে বোঝা যায় এখনও পর্যন্ত বাংলায় নাটকের ঐতিহ্য যথেষ্ট গর্বিত হওয়ার মতো এবং তা ধারাবাহিকভাবে তৎপর। এমন নাটক আরও হওয়ার দরকার আছে আমাদের বহুদিনের ঐতিহ্যকে আরও গভীরতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

Share it