রুনা খামারু, কলকাতা: আলিপুর চিড়িয়াখানার দেড়শ বছর পূর্তিতে দর্শকদের জন্য নতুন চমক ওয়াক ইন বার্ড অ্যাভিয়ারি। অর্থাৎ খাঁচার ভিতর মানুষ, উন্মুক্ত পাখির দল। আসন্ন শীতের মরশুমে ২৫ নভেম্বর পাখি প্রেমীদের জন্য নতুন এই খাঁচাটির উদ্বোধন করলেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। ছিলেন প্রিন্সিপাল চিফ কনর্জারভেটর অফ ফরেস্ট এবং রাজ্য ফরেস্ট ফোর্সের প্রধান শ্রী নীরজ সিংঘল, ওয়েস্ট বেঙ্গল জ়্যু অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি শ্রী সৌরভ চৌধুরী সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা।
চিড়িয়াখানার ইতিহাসে এমন অভিনব ভাবনা এবার শীতে দর্শকদের নতুন আকর্ষণ হবে একথা হলফ করে বলে দেওয়া যায় এখনই। এবারে আসা যাক এই ওয়াক ইন বার্ড অ্যাভিয়ারি বিষয়টিতে। এই বিশেষ খাঁচাটির মধ্যে দর্শকরা প্রবেশ করবেন একটি কাচের টানেলের মধ্যে। যার দুই পাশ এবং উপরের অংশ কাচ দিয়ে নির্মিত। উপরে চোখ মেললেই দেখতে পাওয়া যাবে কিচির মিচির শব্দে এক ঝাঁক পাখিকে উড়ে যেতে। আবার খাঁচার দুই পাশে ডানা মেলছে কখনও বিদেশি হাঁস, পেখম মিলছে ময়ূর অথবা মাটিতে ঠুকরে খাবার খাচ্ছে গ্রেট অর্গ্যাস। আবার ঝুলন্ত ছোটো ছোটো মাটির হাঁড়ি থেকে গলা বের করে উঁকি মারছে বসন্ত বাউরি এবং নানা প্রজাতির নতুন বিদেশি পাখি। খাঁচাটি তৈরি হয়েছে স্বর্ণময়ী হাউজের ঠিক পাশেই। যা ৬০ মিটার লম্বা এবং উচ্চতা চার মিটার। একদম চোখের সামনে থেকে গতিবিধি লক্ষ্য করা যাবে পাখিদের। বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় বনদপ্তর ও চিড়িয়াখানা কর্তপক্ষের যৌথ উদ্যোগে এবং অভিনব জিনিস তৈরি হয়েছে। যা এবার শীতে চিড়িয়াখানার সেরা আকর্ষণ হতে চলেছে।”
চিড়িয়াখানার অধিকর্তা শ্রী শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “এমন এনক্লোজার দেখার জন্য দর্শকদের আলাদা করে টিকিট কাটতে হবে না। আপাতত ১৪টি প্রজাতির ২০০ পাখি এখানে ছাড়া হয়েছে। আগামীদিনে সেই সংখ্যাটা আরও বাড়বে। এদের মধ্যে রয়েছে কাকাতুয়া, কয়েকটি প্রজাতির টিয়া, রুডি শেলডাক, নববিল্ড ডাক, বার হেডেড গুজ, কনিউর, নীল গলা বসন্তবৌরি, ঘুঘু, ময়না, চন্দনা, গোল্ডেন ফেজ্যান্ট, ব্রাহ্মণী ডাক, ময়ূর, রেড জঙ্গল ফাউল ইত্যাদি।”
এছাড়াও এদিন অনস্পট অনলাইন টিকিট কাটার ব্যবস্থাও চালু করেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। এদিনের অনুষ্ঠান শেষে চিড়িয়াখানার ডেপুটি ডিরেক্টর ড. পিয়ালি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এবারের শীতে চিড়িয়াখানার তরফে দর্শকদের জন্য নতুন উপহার হল এই ওয়াক ইন বার্ড অ্যাভিয়ারি। যার অর্থ খাঁচার ভিতর দর্শকরা আর তার আশাপাশে ঘুরে বেড়াবে অসংখ্য পাখি। এছাড়া আগে অনলাইনে অ্যাডভান্স টিকিট কাটা যেত। এবার থেকে অনস্পট টিকিটও বুক করা যাবে। তাই শীতের মরশুমে এই দুটি উপহার উপভোগ করুন দর্শকরা।”