bddhadeb Guha
Share it

নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: এইভাবে তাঁকে চলে যেতে হবে, নিজেও সম্ভবত আঁচ করতে পারেননি তিনি। মাত্র একমাস আগেও বলেছিলেন, ‘আমি এত সহজে ফুরিয়ে যাব না’। কিন্তু, মারণ কোভিডের কাছে অসহায় সকলেই। কোভিড পরবর্তী জটিলতার সঙ্গে যুঝে উঠতে পারলেন না শেষ পর্যন্ত। রবিবার রাতে হৃদরোগে প্রয়াত হলেন বাংলার অন্যতম সেরা সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ।

১৯৩৬ সালের ২৯ জুন। কলকাতার বুকেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন বুদ্ধদেব গুহ। পড়াশোনা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। পেশায় ছিলেন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্যও। যুক্ত ছিলেন আকাশবাণী কলকাতার অডিশন বোর্ডের সদস্য হিসেবেও। কিন্তু, সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছিল তাঁর লেখার ক্ষমতা। বুদ্ধদেব গুহর কলমের আঁচরে একে একে জন্ম নিয়েছিল কালজয়ী সাহিত্য। তাঁর লেখা সমৃদ্ধ করেছে বাংলা সাহিত্যকে। সেই লেখাগুলিই চিরস্মরণীয় করে রাখবে তাঁকে। তাঁর প্রয়াণে বাংলা সাহিত্যের একটি যুগের অবসান ঘটল। বুদ্ধদেব গুহর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছে বাংলার সাহিত্যজগৎ থেকে শুরু করে অসংখ্য অনুরাগীরা।

রবিবার রাত ১১ টা ২৫ মিনিটে ‘ঋজুদা’র স্রষ্টাকে চিরবিদায় জানায় বাঙালি সাহিত্যপ্রেমী পাঠকরা। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। গত এপ্রিল মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, সুস্থও হয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই কোভিড পরবর্তী একাধিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল শরীরে। শেষরক্ষা হল না। ৩৩ দিন হাসপাতালে থাকার পর করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা জিতে গিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু, চলতি মাসেই সাহিত্যিককে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার জেরে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট ছাড়াও জনপ্রিয় এই সাহিত্যিকের মূত্রনালীতেও সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এছাড়া তাঁর লিভার এবং কিডনিতেও সামান্য সমস্যা ছিল। দৃষ্টিশক্তির সমস্যাও ছিল বুদ্ধদেব গুহর। চারজন চিকিৎসকের একটি মেডিক্যাল টিম তাঁকে কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। ফের একবার তাঁর করোনা পরীক্ষাও করা হয়। কিন্তু, রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

বহু কালজয়ী উপন্যাসের স্রষ্টা বর্ষীয়ান সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। তাঁর উল্লেখযোগ্য লেখা, ‘জঙ্গল মহল’, ‘বাবলি’, ‘মাধুকরী’, ‘কোজাগর’, ‘হলুদ বসন্ত’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’, ‘কুমুদিনী’, ‘খেলা যখন’, ‘চানঘরে গান’ সাহিত্যজগতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ‘হলুদ বসন্ত’ উপন্যাসের জন্য ১৯৭৬ সালে তিনি পান আনন্দ পুরস্কার। কিশোর সাহিত্যেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। বুদ্ধদেব গুহ মানেই ‘ঋজুদা’ কিংবা ‘ঋভু’র মতো চরিত্র। যা কয়েক প্রজন্মের কিশোর মনে দাগ কেটেছে।

Share it