medical entrance examination
Share it

নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: কারও বাবা রাজমিস্ত্রি, কারও বাবা মুদির দোকানে কর্মী। তাদের ঘরেই আলোকিত করতে চলেছে দুই পড়ুয়া। সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে নজরকাড়া ফল পেয়েছে বীরভূমের দুই তরুণ তরুণী।

প্রথম জন মুরারই ২ নম্বর ব্লকের ন-নগর গ্রামের আব্দুল হামিদ শেখ, অন্যজন খোয়রাশোল ব্লকের ছোড়া গ্রামের আলো মণ্ডল। আব্দুলের বাবা জিয়ারুল শেখ পেশায় রাজমিস্ত্রি। আগে কলকাতায় কাজ করতে যেতেন। এখন এলাকাতেই কাজ করে সংসার চালান। মাঝে মধ্যে আব্দুলকেও বাবার সঙ্গে কাজে হাত লাগাতে হয়েছে। তবে পড়াশোনায় ফাঁকি দেয়নি কোনওদিন। তার ফলও পেয়েছে হাতেনাতে। আব্দুল মিত্রপুর অঞ্চল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিকে ৬৬৪ নম্বর পেয়ে সেরা হয়েছিল। এরপর হাওড়ার খলোদপুর হাইমাদ্রসা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক ৪৭২ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। সেখান থেকে হাওড়া সাঁতরাগাছি আলামিন মিশনে থেকে কোচিং নিয়ে সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে ৭২০ মধ্যে ৬৪৫ নম্বর পেয়ে সর্বভারতীয় ভাবে ৪৮৯৩ স্থানে রয়েছে সে। তার শতকরা স্কোর ৯৯.৬৭।

অন্যদিকে আলো মণ্ডল ৭২০ মধ্যে ৬২৮ নম্বর পেয়ে সর্বভারতীয় ভাবে ৮৯৭২ স্থানে রয়েছে। তার শতকরা স্কোর ৯৯.৪১। আলোর বাবা নগেন্দ্র চন্দ্র মণ্ডল মুদির দোকানের কর্মী। কখনও কখনও মাঠে ধান কাটার কাজও করতে হয় আলোকে। মাঝে মধ্যে আলোকে বাবার খবর নিয়েও যেতে হয়। হারখাটা পরিশ্রমের পরও আলো মাধ্যমিকে গ্রামের স্কুলে ৬৪২ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছিল। এরপর দুবরাজপুর সারদেশ্বরী বিদ্যামন্দির ফর গার্লস থেকে ৪৮৬ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়। বাবা নগেন্দ্রবাবু বলেন, “সমান্য টাকা বেতনে মেয়েকে পড়াতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিক ছয় হাজার টাকা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়েছে। অবশ্য শিক্ষকরা কোনও পারিশ্রমিক নেননি। তাদের উৎসাহেই মেয়ে সাফল্য পেয়েছে। খুব ভালো লাগছে”।

আব্দুল বলেন, “আমি নিউরোলজিস্ট চিকিৎসক হতে চাই। কারণ ছোট থেকেই মাথা নিয়ে আমার পড়তে ভালো লাগত। তাছাড়া আমাদের আত্মীয়দের অনেকেই নিউরো সমস্যায় ভুগছে। তাদের কথা চিন্তা করেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি”। চিকিৎসক হয়ে ব্যবসা নয়, গ্রামের দরিদ্র মানুষের পাশে থেকে চিকিৎসা করতে চায় আব্দুল ও আলোরা।

Share it