ভুট্টাবীজ নিয়ে রাজ্যস্তরের কর্মশালার কয়েকটি মুহূর্ত - ছবি সুদীপ্ত চক্রবর্তী
Share it

রুনা খামারু: কৃষ্ণনগরে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে সম্প্রতি ভুট্টা নিয়ে সেখানে রাজ্যস্তরের একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়। বীজ ও খাদ্যশস্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে ভুট্টার উৎপাদন বাড়াতেই এই উদ্যোগ। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ভুট্টা গবেষণা কেন্দ্রের (ICAR-IIMR) অধিকর্তা ডক্টর এস এল জাঠ, ভুট্টার ব্রিডার ডক্টর ভূপিন্দর কুমার সহ রাজ্যস্তরের পদস্থ আধিকারিকরা।

২৪ জানুয়ারি ওই ওয়ার্কশপে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের ইকনোমিক বোটানিস্ট নাইন শ্রী সায়ন্তন দে বলেন, “চাহিদা মতো ভুট্টার বীজ উৎপাদন আরও কীভাবে প্রসারিত করা যায় সেটাই এই ওয়ার্কশপের মূল উদ্দেশ্য। বিভিন্ন হাইব্রিড ভুট্টার বীজ উৎপাদনের জন্য যে ইনব্রিড জাতগুলির প্রয়োজন হয় সেই পুরুষ ও স্ত্রী জাতগুলি আমাদের গবেষণা কেন্দ্রে আমরা তৈরি করছি। নদীয়া জেলার বিভিন্ন গ্রামে হাইব্রিড ভুট্টার বীজ উৎপাদন (Hybrid Maize Seed Production) ঘুরে দেখে এখানকার কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুট্টার প্রোজেক্ট আধিকারিকরা। নদীয়া সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও ভুট্টার বীজ উৎপাদন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ভুট্টা গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে আমাদের রাজ্য সরকার খুব নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রেখে কাজ করতে চাইছে। রাজ্যে যে বীজ উৎপাদন ব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে আগামী কয়েক বছরে তা আরও সুসংহত হবে বলে আমরা আশাবাদী। এতে চাহিদা মতো ভুট্টার বীজ তৈরি হবে রাজ্যে। এবং আমাদের কৃষকরা আর্থিকভাবে অনেক বেশি লাভবান হবেন।”

তিনি আরও বলেন, “চাহিদা ও জলবায়ুর পরিবর্তনের নিরিখে ধান, গমের তুলনায় ভুট্টার চাষ এখন অনেক বেশি লাভজনক। ফলে আমাদের রাজ্যে ভুট্টার চাষ খুব দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। এবং সর্বভারতীয় উৎপাদনশীলতার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গই প্রথম। অর্থাৎ রাজ্যে প্রতি হেক্টরে ৮ টনের উপরে ভুট্টার গড় উৎপাদন হয়। পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিতে ভুট্টার চাহিদার পাশাপাশি সাম্প্রতিক অতীতে সরকারের বেশ কিছু পলিসির কারণে ভুট্টার চাহিদা আকাশচুম্বী হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে জ্বালানি তেলের আমদানি খরচ কমাতে। এবং সেজন্য নেওয়া হয়েছে মিশন ২০২৫-২৬। ওই মিশনে পেট্রলের মধ্যে ২০ শতাংশ ইথানল ব্লেন্ডিং করা হবে। ইথানল ব্লেন্ডিংয়ের যে অগ্রগতি ঘটেছে সেই সাফল্যের ভিত্তিতে সরকার ঠিক করছে যে ডিজেলেও তারা ৫ শতাংশ ব্লেন্ডিং করবে। ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে এটা কমপ্লিট রোল ওভারের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এবং দেশজুড়ে এখনও পর্যন্ত সেই লক্ষ্যমাত্রার ১৮ শতাংশ অ্যাচিভ করা গেছে। অর্থাৎ আজকে বাজারে যে পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে ১৮ শতাংশ ইথানল ব্লেন্ডিং হয়ে গেছে। তাই ভুট্টার চাহিদা এখন এতটাই বেশি হয়ে গেছে যে ভুট্টার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য যা আছে কৃষকরা খোলা বাজারে তার থেকেও বেশি দাম পাচ্ছেন, এতে তাঁরা খুবই খুশি।”

Share it