নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: হাওড়া জেলার শেষ প্রান্তে বাগনান ১ নম্বর ব্লকের মানকুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে রূপনারায়ণ নদী। নদীর পাশেই বাড়ি হওয়ার সুবাদে প্রতিদিনের মতো শনিবার সন্ধ্যা নামার সময় নদীর পাড়ে বসে গল্প করছিলেন রাজু কোটাল, সঞ্জিত পাত্র, সুরজিৎ পাত্ররা। হঠাৎ নদীর তীরে কিছু একটা পড়ে থাকার মতো লক্ষ্য করেন। কাছে গিয়েই দেখেন একটা পূর্ণবয়স্ক গাঙ্গেয় শুশুকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। রাজু কোটাল, সঞ্জিত পাত্র ও সুরজিৎ পাত্র তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিকের সঙ্গে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চিত্রক প্রামাণিক, সুমন্ত দাস ও রঘুনাথ মান্না ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এদিকে শুশুক দেখতে ভিড় করেন অনেকে। তাঁদের বোঝানো হয় এই শুশুক সম্বন্ধে। জোয়ারের জন্য নদীর জল বাড়তে থাকে। তাই রাজু, সঞ্জিতদের সঙ্গে নিয়ে চিত্রক, সুমন্ত, রঘুনাথ শুশুকের মৃতদেহটি তুলে নিয়ে আসেন। বন বিভাগের উলুবেড়িয়া রেঞ্জের কর্মীরাও খবর পেয়ে উপস্থিত হন সেখানে। তাঁরা মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যান ময়নাতদন্তের জন্য।
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিক বলেন, “গাঙ্গেয় শুশুক বা গ্যাঞ্জেটিক ডলফিন ভারতবর্ষের জাতীয় জলজ প্রাণী। কয়েকদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ভারতে এই প্রাণীর সংখ্যা কত, তার জন্য সমীক্ষা চালানো হয়। হাওড়া জেলার মানকুর সংলগ্ন এই রূপনারায়ণ নদীতে গাঙ্গেয় শুশুক ভালো রকম দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু প্রায় সময়ই মাছ ধরার ট্রলারের আঘাতে বা মাছ ধরার জালে আটকে এদের মৃত্যু ঘটছে। দ্রুত গ্যাঞ্জেটিক ডলফিনের সংখ্যা কমছে। এটা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর। মৎস্যজীবীদের মধ্যে আরও বেশি করে সচেতনতা শিবির করতে হবে।”
বন বিভাগের উলুবেড়িয়া রেঞ্জের রেঞ্জার রাজেশ মুখার্জী বলেন, “কী কারণে শুশুকটির মৃত্যু হল তা জানতে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকায় বন দপ্তরের পক্ষ থেকে সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হবে।”