নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে ইউক্রেন থেকে। খুশি বাবা, মা পরিবার। খুশির হাওয়া বীরভূমের রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর গ্রামে। বাড়ি ফিরেই পরিবার ও গ্রামবাসীদের আতঙ্কের দিনগুলির অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন চন্দ্রনাথ দত্ত।
ডাক্তারি পড়তে ২০১৮ সালে বীরভূমের রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর গ্রাম থেকে সুদুর ইউক্রেনে পাড়ি দিয়েছিলেন চন্দ্রনাথ। এবারই তাঁর শেষ বর্ষের পড়া শেষ করে বাড়ি ফেরার পালা ছিল। কিন্তু, তার আগেই রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ তাঁর স্বপ্ন উলটপালট করে দিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি ছিলাম ইস্ট্রান পার্টে। যুদ্ধে ওই এলাকায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে কয়েকদিন বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখানেই আমার সঙ্গে বেশ কিছু ডাক্তারি পড়ুয়া ছিলেন। এরপরেই আমরা ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি।”
চন্দ্রনাথ দত্ত আরও জানিয়েছেন, “ভারতীয় দূতাবাসের পরামর্শে আমরা একটি বাস ভাড়া করে রোমানিয়ার বর্ডারে পৌঁছই। বাসের গায়ে ভারতীয় পতাকা লাগানো হয়েছিল। যাতে রাশিয়ার সেনারা আমাদের উপর আক্রমণ করতে না পারে। আমরা যখন বর্ডারে পৌঁছই সেখানে তখন এক হাজার ছাত্রছাত্রী দাঁড়িয়ে ছিল। ওইদিনই আমরা বর্ডার পেরিয়ে রোমানিয়া পৌঁছই। সেখানে খাবারের ব্যবস্থা করে ভারতীয় দূতাবাস। সেখান থকে আমরা পৌঁছই রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে। সেখান থেকে বিমানে মুম্বই। এরপরেই জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।”
তাঁর কথায়, “প্রতিটি দিনরাত আতঙ্কে থাকতাম। ৫০ জনের ওপর ছাত্রছাত্রী ছিলাম বাঙ্কারে। মাঝে মধ্যে ATM-এ টাকা তুলতে গিয়ে মাথার উপর দিয়ে ড্রোন উড়ে যেতে দেখেছি। আমাদের কলেজের পাশেই একটি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর অফিস ছিল। সেখানে ঘন ঘন আক্রমণ করেছে রাশিয়ার সেনা। ফলে আতঙ্কে আমরা বাঙ্কারে থাকতাম। বাড়ি ফিরে মনে হচ্ছে নতুন জীবন পেলাম।”
চন্দ্রনাথের মা শিল্পী দত্ত বললেন, “খুব আতঙ্কে ছিলাম। ওই অবস্থা থেকে ছেলে ফিরে আসবে ভাবতে পারিনি। আমরা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সুষ্ঠুভাবে ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”