নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: ২৬ জুন রবিবার স্বনামধন্য বাংলা সাহিত্যিক বিমল করের জন্মশতবার্ষিকী পালন করল সাহিত্য অকাদেমি। কলকাতার পূর্বীয় কার্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে একটি অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন সাহিত্য অকাদেমির সচিব ড. কে. শ্রীনিবাসরাও। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের ছোট ছোট দুঃখ, কষ্ট, আনন্দকে অনুভব করেছিলেন বিমল কর। তাঁর লেখায় ফুটে ওঠা এইসব আবেগই ভাঁর লেখাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে।” ড. কে. শ্রীনিবাসরাও তাঁর ভাষণে সাহিত্য অকাদেমির বিবিধ কার্যকলাপের কথাও তুলে ধরেন।
সাহিত্য অকাদেমির বাংলা উপদেশক পর্ষদের আহ্বায়ক ড. সুবোধ সরকার তাঁর ভাষণে, বিমল করের বিপুল জনপ্রিয়তার কথা বলেন। “আত্মজা, যদুবংশ, অসময়, খড়কুটো, প্রচ্ছন্ন, ইত্যাদি পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকের শ্রেষ্ঠ সাহিত্য নৈপুণ্যের পরিচায়ক। তাঁর বহু লেখা চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। বিমল কর মাটির মানুষ ছিলেন।”
বিশিষ্ট বাংলা লেখক এবং সাহিত্য অকাদেমির ফেলো শ্রী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় উদ্বোধনী ভাষণে, বিমল করের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা জানান। তিনি বলেন, “তৎকালীন বাংলা সাহিত্যের কথনের রীতিতে পরিবর্তন এনেছিলেন বিমল কর। তাঁর লেখায় ঘটনার ঘনঘটার বদলে দেখা যায় অন্তঃসলিলা আবেগের প্রকাশ-সঙ্গে বৈষয়িক খুঁটিনাটি। এই কাব্যময় গদ্যের পেছনে ছিল বিমল করের অসামান্য শব্দচয়ন।”
সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি অধ্যাপক চন্দ্রশেখর কম্বার এই উদ্বোধনী অধিবেশনটির সভাপতিত্ব করেন। তিনি বিমল করের উচ্চ প্রশংসার পাশাপাশি নাটক এবং শিশুসাহিত্যের ক্ষেত্রেও বিমল করের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই অধিবেশনটিতে সাহিত্য অকাদেমি প্রকাশিত বিমল করের জীবনীটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটে। বইটির লেখক অধ্যাপক দেবারতি বন্দ্যোপাধ্যায়।
আলোচনাচক্রের প্রথম অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘বিমল কর: জীবন ও কৃতি’। সভাপতিত্ব করেন ড. রামকুমার মুখোপাধ্যায়। এই অধিবেশনে বিমল করের জীবন ও সাহিত্যকে প্রভাবিত করেছিল যেসকল ঘটনা, সেগুলির কথা তুলে ধরেন অধ্যাপক দেবারতি বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনাচক্রের দ্বিতীয় অধিবেশনের বিষয় ছিল ‘বিমল কর: সাহিত্যজগৎ’। এর সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সুমিতা চক্রবর্তী। এই অধিবেশনে শ্রী বীরেন শাসমল বিমল করের ছোটগল্প নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তৎকালীন যুবসমাজের জন্য লেখা বিমল করের সাহিত্যসম্ভারের কথা উঠে আসে তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্লেষণে। শ্রী সাধন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যের শিরোনাম ছিল ‘তাপগতি বনাম এনট্রপি: বিমল করের গল্পের ভুবন’। তাঁর বক্তব্যে বিমল করের দেখায় প্রকরণগত অভিনবত্বের কথা তুলে ধরার পাশপাশি অন্তঃসলিলা দার্শনিক ভাবধারার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
আলোচনাচক্রে পরিচালনায় ছিলেন সাহিত্য অকাদেমি পূর্বাঞ্চলীয় শাখার আঞ্চলিক সচিব ড. দেবেন্দ্র কুমার দেবেশ এবং কার্যক্রম আধিকারিক ড. মিহির কুমার সাহু।