Share it

রাত পোহালেই মকর সংক্রান্তি। বছরের এই বিশেষ দিনটিতে পুণ্যস্নান সারতে দূরদুরান্ত থেকে অনেকেই ভিড় জমান গঙ্গাসাগরে। তবে করোনার কারণে এবার পরিস্থিতি একেবারে আলাদা। সাগরে পুণ্যার্থীদের জন্য প্রশাসনের তরফে সবরকম ব্যবস্থা রাখা হলেও অন্যান্য বছরের মতো এবার পুণ্যার্থীদের ভিড় এখানে অনেকটাই কম। স্বাভাবিকভাবেই গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে সারা বছর যাঁরা রুটি রুজির আশায় থাকেন তাঁদের রোজগারেও ভাটা পড়তে দেখা গেছে এবার।
গঙ্গাসাগরে স্নান সেরে কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দেন পুণ্যার্থীরা। আর মন্দির চত্বরে এই সময় ভিড়ে মাঝে পা ফেলাই দায় হয় অন্যবার। তবে এবার সেই তুলনায় কপিল মুনির আশ্রমেও ভিড়ের তেমন লম্বা লাইন নজরে আসেনি।
মন্দিরের পাশেই থাকে নাগা সন্ন্যাসীদের থাকার জায়গা। এবার সেখানেও সন্ন্যাসীর সংখ্যা নেহাত হাতে গোনাই নজরে এসেছে।
তবে করোনা পরিস্থিতিতেও সাগরে পুণ্যার্থীদের সবরকম সহযোগিতায় সরকারি তরফে গড়া হয়েছে সাতটি COVID হাসপাতাল, আটটি সেফ হোম, ১১টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও পাঁচটি SARI আইসোলেশন সেন্টার। এখানে মোট ২০০০ শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারি তরফে।

সুরক্ষার দিকটি আঁটসাঁট রাখতে বানানো হয়েছে একাধিক ওয়াচ টাওটার। ড্রোনে সাহায্যেও চালানো হচ্ছে নজরদারি।
এছাড়া কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার সামাল দিতে রাখা হয়েছে ১০০টি অ্যাম্বুলেন্স, তিনটি জল ও দুটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, পাঁচটি QRT। এছাড়া বিতরণ করা হয়েছে চার লাখ এক হাজারের বেশি মাস্ক।

সমস্ত গাড়ি ও পাবলিক প্লেস স্যানিটাইজ করা হচ্ছে সময়ে সময়ে। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা পুণ্যার্থীদের সবসময় সচেতন করছেন স্যানিটাইজ করা ও সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার জন্য। তবে সাগরে নেমে সংক্রান্তিতে পূণ্য স্নান করা যাবে কি না তা নিয়ে মাইকে কোনও প্রচার করতে শোনা যায়নি।
গঙ্গাসাগরে এখনও পর্যন্ত করোনা পজিটিভ কোনও রোগী পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
করোনা বা বয়সজনিত কারণে মকর সংক্রান্তিতে যাঁরা গঙ্গাসাগরে আসতে পারছেন না তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ই-দর্শন সারতে পারেন বাড়িতে বসেই।
এছাড়া কলকাতার আউট রাম ঘাট, কাকদ্বীপের হারউড বাস স্ট্যান্ড, ও গঙ্গাসাগর সি বিচের পাঁচটি কাউন্টার থেকে ই-স্নানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনলাইনে বুক করলে তিন দিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে পবিত্র গঙ্গা জল ও কপিল মুনি মন্দিরের প্রসাদ।
এছাড়া আরও অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুণ্যার্থীদের পরিষেবায়। সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল QR কোড স্ট্রিপ। গঙ্গাসাগর মেলায় এসে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এই ঘটনা এড়াতে এবার শিশু ও বয়স্কদের পুণ্যার্থীদের দেওয়া হয়েছে QR কোড স্ট্রিপ। এতে হারিয়ে গেলেও সহজেও ট্র্যাক করে খুঁজে পাওয়া যাবে।

Share it