বাজার সরানোর নামে তৃণমূল নেতার উপস্থিতিতে চলল তাণ্ডব। ঝুড়ি নিয়ে ফুটপাতে বসে থাকা সবজি ও ফল ব্যবসায়ীদের ত্রিপলের ছাউনি ভেঙে মিশিয়ে দেওয়া হল মাটিতে। পুলিশের সামনেই চলল লুঠপাট। কান্নায় ভেঙে পরেছেন দিন আনি দিন খায় ওই সমস্ত পরিবারের সদস্যরা। সেই ছবি তুলতে গেলে মারধর করা হয় চিত্র সাংবাদিককে। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর মোবাইল।
বীরভূমের আমোদপুর–কাটোয়া রাস্তায় কীর্ণাহারে নিকাশিনালার উপর বসে অস্থায়ী সবজি বাজার। গ্রামগঞ্জের কিছু মানুষ দু-তিন ঘণ্টা অস্থায়ীভাবে সেখানে ব্যবসা করে সংসারের অভাব মেটায়। শুক্রবার সকালে পঞ্চায়েত প্রধান শিবরাম চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যের উপস্থিতে সেই হাত ভেঙে দেয়। লুঠ করে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যবসায়ীদের সবজি ও ফল। অস্থায়ী ছাউনি মাটিতে মিসিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের সামনেই চলে তাণ্ডব। সেই ছবি সংগ্রহ করতে গেলে একটি দৈনিক সংবাদ পত্রের চিত্র সাংবাদিক কল্যাণ আচার্যের মোবাইল কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। প্রতিবাদে তাঁরা আমোদপুর–কাটোয়া রাস্তা অবরোধ করে। ঘণ্টাখানেক পর পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। সীমা দলুই বলেন, “প্রধান গুন্ডাবাহিনী নিয়ে এসে সব লুঠ করে নিয়ে গেল। আমাদের অস্থায়ী ছাউনি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। বেধড়ক মারধর করেছে। আমরা সামান্য সবজি বিক্রি করে সংসারের খরচ যোগাই। আজ সব লুঠ করে নিয়ে গেল পুলিশের সামনে।”
আরেক মহিলা বলেন, “আমি আম ৫০ কেজি, ভেন্ডি, টমেটো, পটল ২০ কেজি করে, আদা, রসুন, লঙ্কা ৫ কেজি করে নিয়ে বসেছিলাম। প্রধানের গুন্ডারা সব লুঠ করে নিয়ে গেল। কিছু জিনিসপত্র রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে পায়ে পিষে নষ্ট করে দেয়। এখন আমরা কি খাব?”
প্রধান শিবরাম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তায় যানজট মুক্ত করতে সকলকে সুপার মার্কেটে উঠে যাওয়ার আবেদন করেছিলাম। মাইকে করে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কেউ সরে যায়নি। তাই এদিন আমরা তাদের তুলতে গিয়েছিলাম। সে সময় কিছু দুষ্কৃতী আমাদের মধ্যে মিশে গিয়ে লুঠপাট চালায়। তবে আমাদের কেউ লুঠপাট চালায়নি।”
বিজেপি নেতা তারকেশ্বর সাহা বলেন, “কয়েকটি গ্রামের গুন্ডা বাহিনী নিয়ে গিয়ে তাণ্ডব চালান হয়েছে। আমাদের কর্মীর দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। খুচরো সবজি ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র লুঠ করা হয়েছে। রাজ্যে অরাজকতা চলছে। এর শেষ কথায় কেউ জানে না।”