বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
Share it

বিধায়কের পদকে বিদায় জানানো কার্যত পাকা করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিধানসভায় গিয়ে অধ্যক্ষের ঘরে যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে নিজের হাতে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফাপত্র তুলে দেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। ইস্তফাপত্র খতিয়ে দেখে অধ্যক্ষ তাতে সিলমোহর দিলে তবেই নিশ্চিত হবে রাজীবের বিদায়।


অধ্যক্ষের ঘর থেকে সোজা বিধায়ক হিসেবে তাঁর জন্য বরাদ্দ ঘরটিতে যান রাজীব। ঘরের দেওয়ালে টাঙানো প্রিয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিটা নিজের হাতে নামিয়ে আনেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা থেকে বেরিয়ে আসার সময় ডোমজুড়ের জনপ্রতিনিধির হাতে ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ছবি।


আর এটাই অবাক করে দেয় উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের। টিভি চ্যানেলগুলিতে জুম করে বারবার দেখানো হতে থাকে সেই ছবি। স্বাভাবিকভাবেই প্রাক্তন বনমন্ত্রীকে যে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিলই। অনিবার্যভাবে তা হলও। উত্তরে রাজীববাবু জানালেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার মাতৃসমা। তাঁর হাত ধরেই আমি রাজনীতিতে এসেছি। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা থাকবে আজীবন।”


রাজীবের বিদায়বেলায় এই ছবি অনেক প্রশ্ন তুলে দিল রাজনৈতির বিশেষজ্ঞদের মনে। রাজনীতির আঙিনায় অনেক সম্ভব-অসম্ভব সমীকরণের রূপ দেখেছে বাংলা তথা দেশবাসী। কিন্তু, এহেন ছেড়ে আসা দলের নেতা বা নেত্রীর ছবি হাতে নিয়ে প্রকাশ্যে আসা রাজনীতিতে নতুন বৈকি। সাধারণত, বিদায়ী নেতা নেত্রীর মুখে পুরনো দলের সমালোচনা কাদা ছোড়াছুড়ি শুনতেই অভ্যস্ত ভারতীয় রাজনীতি। কিন্তু, এদিনের এই ‘ছবি রাজনীতি’র উদাহরণ আর দ্বিতীয়টি নেই ভূ-ভারতে।

শুক্রবার রাতেই রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর সফরকালেই BJP-তে যোগদান করতে পারেন ডোমজুড়ের বিদায়ী বিধায়ক। আগামী ৩ মাস রাজনীতির হাওয়া কোনদিকে বইবে, তা পরিষ্কার নয় এখনও। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এটি রাজীবের অভিনবত্ব। আসলে এই ‘ছবি রাজনীতি’র কাজটি করে রাজীব এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন। BJP-কে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও খণ্ডন করলেন না রাজীব। আবার তৃণমূল নেত্রীকে সম্মান ও শ্রদ্ধা দেখিয়ে আগামীদিনে দলে ফেরার রাস্তাও পরিষ্কার করে রাখলেন ডোমজুড়ের বিদায়ী বিধায়ক।

Share it