নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: আরামবাগ আর কৃষ্ণনগরের থেকেও বারাসতে বক্তৃতায় ঝাঁঝ বাড়ালেন অনেকটাই। বুধবার বারাসতে প্রথম থেকেই ‘নারীশক্তি’ট্যাগলাইনকে হাতিয়ার করে টি-২০ মেজাজে ব্যাট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে আরামবাগ ও কৃষ্ণনগরেও সন্দেশখালি প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল তাঁর বক্তব্যে। কিন্তু, বারাসতে নমোর বক্তৃতা ছাপিয়ে গেল সব কিছুকে। ‘তৃণমূল পাপ করেছে’, ‘সন্দেশখালি ঝড় গোটা রাজ্যে উঠবে’ বলার পাশাপাশি তৃণমূলকে ‘গ্রহণ’-এর সঙ্গেও তুলনা করলেন। বললেন বাংলা তৃণমূল নামক ‘গ্রহণের কবলে’।
সন্দেশখালি আর বারাসত যেহেতু উত্তর ২৪ পরগনায়। আর মোদীর বারাসতের সভা ছিল বিজেপির ‘মহিলা সম্মেলন’। সেক্ষেত্রে মোদী ‘নারীশক্তি’নিয়ে যে তৃণমূলকে আক্রমণ করবেন তা অবশ্য অনুমেয় ছিল। তবে প্রথম থেকেই যে তিনি অলআউট অ্যাটাকে যাবেন তা অবশ্য এতটা আন্দাজ করা যায়নি। মোদীর বক্তৃতার বড় অংশ জুড়ে ছিল মহিলাদের কথা। সেই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যেমন কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে মহিলাদের উন্নয়নের কথা বলেছেন, তেমনই বাংলায় মহিলা নির্যাতন নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণও করেছেন। সেই আক্রমণেই দেখা গিয়েছে আগের দুই সভার চেয়ে ঝাঁঝ অনেক বেশি! বাংলার নারীশক্তির বন্দনা গেয়েছেন মোদী। সারদা দেবী, রানি রাসমণি থেকে মাতঙ্গিনী হাজরার কথা উল্লেখ করে ঢুকেছেন সন্দেশখালি প্রসঙ্গে। শুরুতেই বলেছেন, “তৃণমূল এই ভূমিতে নারীশক্তির উপর অত্যাচার করেছে। মা-বোনদের উপর অত্যাচার করে তৃণমূল ঘোর পাপ করেছে। সন্দেশখালিতে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে যে কারও মাথা লজ্জায় নুয়ে যায়। কিন্তু তৃণমূলের কিছু যায়-আসে না।”
মোদী সন্দেশখালিতে ‘নির্যাতিতা’ মহিলাদের সঙ্গেও একান্তে দেখা করেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসতে সভামঞ্চের পিছনেই মোদীর বিশ্রামের জন্য তৈরি ঘরে কয়েকজন মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁদের থেকে অভিযোগের বিবরণ শোনেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সেই সাক্ষাতের আগেই তাঁর বক্তৃতায় নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে হুঁশিয়ারির সুরে মোদী বলেন, “মা-বোনদের এই রাগ সন্দেশখালিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। পুরো রাজ্যে সন্দেশখালি ঝড় উঠবে।”
এবারের লোকসভা ভোটে এরাজ্যে বিজেপির পাখির চোখ যে মহিলা ভোট ব্যাঙ্ক তা অবশ্য স্পষ্ট ‘সন্দেশখালি’র ঘটনা থেকেই। বারাসতের মঞ্চ থেকে মোদী বলেছেন, “মা-বোনদের সুরক্ষা দিতে পারে শুধু বিজেপি। তুষ্টিকরণ এবং তোলাবাজদের নিয়ে কাজ করা তৃণমূল সরকার কখনও মা-বোনদের সুরক্ষা দিতে পারবে না। দেশজুড়ে মহিলা সঙ্কটকালীন হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। কিন্তু, এরাজ্যে তৃণমূল সরকার এটা চালু হতে দিচ্ছে না! এরা কখনও মা-বোনদের জন্য ভাবে না।” মহিলাদের জন্য কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্প বাংলায় চালু না হওয়ার জন্যও তৃণমূল সরকারের দিকে অভিযোগের তির ছুড়ে দিয়েছেন নমো।