নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: বিক্ষিপ্ত হিংসা, অশান্তির জেরে শনিবার পঞ্চায়েত ভোটে রক্ত ঝরল রাজ্যজুড়ে। বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ভোটকে কেন্দ্র করে হিংসাত্মক ঘটনায়। তার মধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, বিকেল ৫টা পর্যন্ত পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পড়েছে ৬৬.২৮ শতাংশ।
রাজ্যে মনোনয়ন পর্ব থেকেই হিংসার অভিযোগ উঠে আসছে। বিরোধীদের অভিযোগ পালটা জবাবে গত একমাস জুড়ে উত্তপ্ত ছিল রাজ্যের পরিস্থিতি। হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। এরইমধ্যে রাজ্যের সব ভোটকেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। রাজ্যে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়ে হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান রাখতে হবে। যদিও প্রশাসনিক তালমিলের অভাবে শেষ পর্যন্ত রাজ্যের সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছতে পারেননি। শনিবার বিকেলে এনিয়ে বিএসএফের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েও অভিযোগ জানানো হয়। রাজীব সিনহা জানিয়েছেন, রাজ্যের ৬০ হাজার বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের চেষ্টা করা হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত এক চতুর্থাংশ বুথে বাহিনী রাখা সম্ভব হয়।
রাজ্যের বেশ কয়েকটি বুথে ব্যালট লুট, ব্যালট বাক্সে আগুন, পুকুরে ফেলা, জল ঢালার অভিযোগও উঠেছে। সাতটি জেলায় হিংসার জেরে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বেসরকারি মতে পরিসংখ্যান মিলেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, মোট ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত ছিল মুর্শিদাবাদ। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত সেখানে মারা গিয়েছেন পাঁচ জন। সেখানে দুই তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। নিহত এক কংগ্রেস এবং সিপিএম কর্মীও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে নিহত তৃণমূল কর্মী। কোচবিহারের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটেরহাট ৪/৩৮ নম্বর বুথে বিজেপির এজেন্টকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। দিনহাটায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বিজেপি কর্মীর। মালদহের মানিকচকে তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ইংরেজবাজারে বোমাবাজিতে নিহত তৃণমূল প্রার্থীর শাশুড়ি। নদিয়ার চাপড়ায় তৃণমূলের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। গোয়ালপোখরেও শাসকদলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় নিহত তৃণমূলের এজেন্ট। গোয়ালপোখরে এক কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নাম মহম্মদ জামিরউদ্দিন।
যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা শনিবার সাংবাদিকদের জানান, ভোট চলাকালীন রাজ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। হিংসার দায় এড়িয়ে তাঁর দাবি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি রাজ্য পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত। নির্বাচন কমিশনের কাজ সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন ‘ব্যবস্থাপনা’। কমিশন সেই কাজ ভালোভাবেই করেছে। অশান্তির অভিযোগ পেলেই দ্রুত সংশ্লিষ্ট এলাকার এসপি, জেলাশাসককে জানিয়েছে তারা।