বড়সড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা ভারতের উপকূলবর্তী শহরগুলিতে। সতর্কবার্তা দিল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। বলা হয়েছে, এই শতকের শেষে দেশের মুম্বই, চেন্নাই, কোচি এবং বিশাখাপত্তনম-সহ ১২ উপকূলীয় শহর তিন ফুট জলের তলায় চলে যেতে পারে।
ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (IPCC)-র রিপোর্টকে ব্যাখ্যা করে নাসা জানিয়েছে, দেশের ১২টি এমন শহর রয়েছে, যেখানে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন এবং সমুদ্রের জলস্তর বাড়ার প্রবল আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এরমধ্যে কলকাতার খিদিরপুরও রয়েছে।
IPCC-র রিপোর্ট বলছে, গোটা বিশ্বের তুলনায় এশিয়া মহাদেশে সমুদ্রের জলস্তর দ্রুত হারে বাড়ছে। আগে যেখানে ১০০ বছরে জলস্তরের যে পরিবর্তন দেখা যেত, সেখানে প্রতি ৬-৯ বছরের মধ্যে সেই পরিবর্তন হতে পারে। ২০০৬-১৮ সালের মধ্যে সমুদ্রের জলস্তর নিয়ে যে সমীক্ষা করা হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে, গোটা বিশ্বে প্রতি বছর জলস্তরের গড় বৃদ্ধি হয়েছে ৩.৭ মিলিমিটার।
এদিকে পৃথিবী জুড়ে বিধ্বংসী সাইক্লোন, ভূমিকম্প, বন্যা, দাবানল যেভাবে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে মানব সভ্যতা সঙ্কটে। এ সব কি নিছকই সমাপতন? রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট অবশ্য তা মানতে নারাজ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের বৃদ্ধি যে বিশ্ব উষ্ণায়নেরই প্রভাব তা নিশ্চিত করেছে IPCC রিপোর্ট। আর এরজন্য মানুষের বিধ্বংসী কার্যকলাপকেই দায়ী করা হয়েছে। এটাই পৃথিবীর নিউ নর্মাল পরিস্থিতি বলে রিপোর্টে উল্লেখ।
অর্থাৎ, প্রবল তাপপ্রবাহ, বিধ্বংসী আগুন বা বিপর্যয়কারী বন্যা- যা এতকাল ১০ বা ৫০ বছরে একবার ঘটত, সেই ঘটনাগুলোই এখন ঘটবে বারবার, হয়তো বছরে একাধিকবার! মানুষ এখনই সংযত না-হলে ধ্বংসের আর বেশি বাকি নেই।
আর সমুদ্রের যে জলস্তর ইতিমধ্যেই বেড়ে গিয়েছে, তা কমানোর উপায় নেই। তবে নতুন করে জলস্তর বৃদ্ধি রোখা সম্ভব। কিন্তু, সেটা করতে গেলে অনতিবিলম্বে সব দেশ একসঙ্গে সচেতন হতে হবে। না-হলে অচিরেই নেমে আসবে বিপর্যয়, যা থেকে ভারত তো নয়ই, রক্ষা পাবে না কোনও দেশই।