গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান
Share it

সুদীপ্ত চক্রবর্তী, গঙ্গাসাগর: ২০২৪ সালের গঙ্গাসাগর মেলা ভেঙে দিল ভীড়ের যাবতীয় রেকর্ড। রাজ্য সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী এবার মেলায় পুণ্যার্থী সমাগম হয়েছে ১ কোটি ১০ লক্ষেরও বেশি। মঙ্গলবার মেলা শেষে দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন গঙ্গাসাগরে দায়িত্বপ্রাপ্ত যুবকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি সুরেন্দ্র গুপ্তা ও সুন্দরবন জেলা আরক্ষাধ্যক্ষ কোটেশ্বর রাও।

সাংবাদিক বৈঠকে অরূপ বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশবিদেশের ১ কোটি ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী মহাস্নান ও কপিলমুনি মন্দিরে পূজার্পণের পর রাজ্য সরকারের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনায় নিরাপদে ফিরে গেছেন। তাঁর দাবি, এবারেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মুহূর্তে নজরদারি এবং নির্দেশমতো সমস্ত মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্তারা একযোগে কাজ করে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে গঙ্গাসাগর মেলা সম্পন্ন করেছেন। এব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির ভূমিকাও অনস্বীকার্য।

তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ১৩৬৭২ জন আগত তীর্থযাত্রী তাদের আত্মীয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। এদের মধ্যে পুলিশ, প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তৎপরতায় ১৩৬৫১ জনকে তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অসুস্থতার কারণে ২৯৭ জন তীর্থযাত্রী সাগরদ্বীপের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং ৩০৪২ জন তীর্থযাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ৫১ জন তীর্থযাত্রীকে উন্নততর পরিষেবার জন্য কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত মোট ৮ জন অসুস্থ তীর্থযাত্রীকে এয়ার লিফটের মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে কলকাতার এম. আর. বাঙ্গুর হাসপাতালে (৭ জন) ও এস. এস. কে. এম. হাসপাতালে (১ জন) এবং ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে মোট ৭ জন অসুস্থ তীর্থযাত্রীকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

ক্রীড়া, আবাসন ও যুবকল্যাণমন্ত্রী বলেন, এবার মেলায় আগত তীর্থযাত্রীদের মধ্যে সাগরে আসার পথে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন,
মোহন লাল প্রজাপত, বয়স ৫৯ বছর, বাড়ি রাজস্থানে। দিল্লির বাসিন্দা চন্দ্রপাল, বয়স ৫১ বছর। হরিয়ানার সিরসার বাসিন্দা ওম প্রকাশ, তাঁর বয়স ৬৮ বছর। মেলায় অপরাধমূলক ঘটনাও কয়েকটি ঘটেছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত ৪২৩ টি পকেটমারীর ঘটনা ঘটেছে যার ৪০২ টি ক্ষেত্রে খোয়া যাওয়া বস্তু উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ও ৮৭৬ জনকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গঙ্গাসাগর মেলা শেষে “শুদ্ধিকরণ প্রতিবার, গঙ্গাসাগরের অঙ্গীকার” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সমুদ্রতটকে জঞ্জালমুক্ত করার অভিযান চালানো হয়। প্রতীকী ঝাড়ু দিয়ে যার সূচনা করেন উপস্থিত মন্ত্রীরা। ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কৃত করা হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের।

Share it