নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: গভীর রাতে অজয় নদের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল বীরভূমের নানুর থানার বেশ কয়েকটি গ্রাম। সব থেকে বেশি খতিগ্রস্থ হয়েছে সুন্দরপুর গ্রাম। জলের তোড়ে ভেঙে পড়েছে মাটির ও পাকা বাড়ি। প্রশাসন সতর্ক থাকায় প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টির ফলে জল বাড়তে শুরু করে জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে। ময়ূরাক্ষী, অজয়, হিংলো নদীর জল বিপদসীমার উপর বয়তে থাকায় নদী তীরবর্তী গ্রাম গুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে জমির ফসল। নদীর জল ফুলেফেঁপে ওঠায় নদী তীরবর্তী গ্রাম গুলিতে সতর্কতা জারি করেছিল প্রশাসন। তবে প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ঝাড়খণ্ডের সিকটিয়া জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অজয়ের সুন্দরপুর গ্রামের নদী বাঁধ ভেঙে পড়ে। ফলে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে নানুরের সুন্দরপুর, হারমুরা, থুপসুরা, বাসাপাড়া, বামুনিয়া, রামকৃষ্ণপুর সহ প্রায় ৮০ টি গ্রামে। জলের তোড়ে ভেঙে পরে মাটির ও দোতলা পাকা বাড়ি। জাতীয় বিপর্যয় উদ্ধারকারি দল তড়িঘড়ি মানুষকে উদ্ধার করে। বন্যা দুর্গত মানুষদের আশ্রয় এখন নদীর পাড়। বন্যার জলে সর্বস্ব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দুর্গত মানুষজন। দুপুরের পর থেকে গ্রামের জল নামতে শুরু করে। সুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা জীবন বাগদি বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়ায় আমরা গ্রামে জল ঢোকার আগেই পরনের কাপড় পরেই বেরিয়ে চলে এসেছিলাম। সাড়া রাত নদীপাড়ে কাটাতে হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে”।
এদিকে অজয় ও হিংলো নদীর জলে দুবরাজপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বহু মানুষ এখন গ্রামে ঢুকতে পারেনি। যারা গ্রামে ঢুকেছেন মাঝেমধ্যেই ফের গ্রামে জল ঢোকার গুজবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
এদিকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে এদিন দুপুরে বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পাঠান তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এদিন তিনি নিজের বাড়ি থেকে শুকনো খাবার, চাল, ডাল, শাড়ি, কাপড় পাঠান।
বেলার দিকে গ্রামে যান জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি। তিনি বন্যা দুর্গত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, “আমরা সমস্ত দিক থেকে প্রস্তুত ছিলাম। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরাও প্রস্তুত ছিল। ফলে কোন প্রাণ হানির ঘটনা ঘটেনি। তবে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। জল নামলেই ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান হবে”।