রুনা খামারু: “দুশ্চিন্তা করবেন না, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি!” রাতভর জলপাইগুড়িতে চলা উদ্ধারকাজের তদারকি করার পর সোমবার আলিপুরদুয়ারবাসীকেও এভাবেই আশ্বস্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দুপুরে আলিপুরদুয়ারে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে এলাকা পরিদর্শন করেন এবং যাঁরা নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাাপাশি কথা বলেন ত্রাণ, পুনর্বাসন ও চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত রাজ্য সরকারি কর্মী, আধিকারিক ও চিকিৎসকদের সঙ্গে। কোথাও যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে তা নিশ্চিত করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “মানুষ সবকিছু হারিয়েছে এবং তপসিখানা বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও আদর্শ আচরণ বিধি কার্যকর হয়ে গেছে, কিন্তু এখানকার পরিস্থিতি আপৎকালীন এবং একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। কোনও বিপর্যয় ঘটলে প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ করতেই হবে। তারা তা করতে পারে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের সরকার এখানে উপস্থিত। মানুষের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে আমি প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব, যাতে তারা একটি স্বাধীন সমীক্ষা করে। কত টাকার ঘর-বাড়ি নষ্ট হয়েছে, তার হিসাব বের করতে হবে। যাঁদের কাছে একটা বাসন, কিংবা একটা পোশাক পর্যন্ত নেই, গতকাল থেকেই প্রশাসন তাঁদের সহযোগিতা করছে। যদি কেউ কোনও বিপর্যয়ের কবলে পড়েন, তাহলে তাঁকে সাহায্য করা এবং তাঁর জন্য কাজ করা আমাদের কর্তব্য।”
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “প্রশাসন যেভাবে যথাসময় পদক্ষেপ করেছে এবং ত্রাণ শিবির গড়ে তুলেছে তাতে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট স্কুল কমিটি, আমাদের সাংসদ, বিধায়ক, প্রধান, উপপ্রধান এবং জেলা পর্ষদ সদস্যদেরও আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি শুধু আবেদন করব, এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে থাকুন।” সহযোগিতার জন্য সংবাদমাধ্যমকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ ভাবতেও পারেননি, আলিপুরদুয়ারে এত ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ এখানে বহু মানুষের প্রাণ বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু, তাঁরা তাঁদের বাকি সবকিছু হারিয়েছেন। আমি তাঁদের বলব, চিন্তা করবেন না। আমাদের প্রশাসন এখানেই আছে। অবিলম্বে প্রশাসনকে একটি যথাযথ সমীক্ষা করতে হবে এবং কেউ যাতে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের প্রয়োজন অনুসারে সমস্ত ব্যবস্থা করতে হবে।”
সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে চালসায় পৌঁছন। গতকাল সারারাত জলপাইগুড়িতেই ছিলেন। পাশাপাশি প্রশাসন, প্রকাশ চিক বরাইক ও সুমন কাঞ্জিলালের মতো নেতারা যাবতীয় ব্যবস্থাপনার তদারকি করবেন বলে জানান। আগামীকাল অরূপ বিশ্বাসকে কুমারগ্রামে পাঠানো হবে এবং তিনি সেখানকার ত্রাণ শিবিরেও যাবেন। কোচবিহারের প্রতিও সমবেদনা রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। যদিও কোচবিহারে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।