শ্রীধর মিত্র : লোকসভা নির্বাচন প্রায় দোরগোড়ায়। শুধুমাত্র দিনক্ষণ ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। আগামী মাসের মাঝামাঝি নির্ঘণ্ট ঘোষণা করার কথা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। তার আগে ৩ মার্চ বাংলায় আসছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তারই মধ্যে বঙ্গের শাসকদল কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে ‘জনগর্জন সভা’ করতে চলেছে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে। দলীয় সাংসদ, বিধায়ক, সমস্ত সাংগঠনিক জেলা সভাপতি, চেয়ারম্যান, পুর প্রতিনিধি সহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃত্বর কাছে এবার নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুব্রত বক্সি।
সোমবার রাজ্য সভাপতির পক্ষ থেকে সমস্ত দলীয় শাখা সংগঠনের নেতৃত্বর কাছে আসন্ন ১০ মার্চ কলকাতা ব্রিগেডের সমাবেশ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতির নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। দু সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে এই সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ পাওয়ার দিন থেকেই নিজ নিজ মহল্লায়, গ্রাম বাংলার মাঠে ঘাটে, ময়দানে প্রচারাভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় ব্রিগেড সমাবেশের কথা জানিয়ে বলা হয়েছে আপনাদের কাছে নির্দেশ এই যে, এখন থেকেই প্রয়োজনীয় সার্বিক প্রস্তুতি নিতে দলীয় শাখা সংগঠনগুলিকে সঙ্গে নিয়ে আগানী ১০ মার্চ রবিবার ব্রিগেড চল অভিযান সফল ও ঐতিহাসিক-অভূতপূর্ব করে তুলতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য কোন সাংঠনিক জেলাকে ব্রিগেডে কত সংখ্যক কর্মী, সমর্থক, সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে তার নির্দেশ কয়েক দিনের মধ্যেই পৌঁছে যাবে দলীয়ভাবে।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর এই প্রথম ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে সমাবেশ হতে চলেছে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই সমাবেশকে ঐতিহাসক করে তুলে চলেছেন তিনি।
এর মধ্যেই ব্রিগেড সমাবেশকে নিয়ে জেলায় জেলায় প্রস্তুতি বৈঠক শুরু করে দিয়েছে দলীয় নেতৃত্বরা। আলোচনা হচ্ছে বিধানসভা ধরে প্রস্তুতি বৈঠক ৫ মার্চের মধ্যে শেষ করে বিধানসভা ভিত্তিক কত সংখ্যক মানুষকে ব্রিগেডে আনা যাবে তা নিয়ে। তাই বাংলার সব জেলায় জেলায় প্রস্তুতি বৈঠক শুরু হয়ে গেছে বা দু-একদিনের মধ্যেই সেরে ফেলবেন তাঁরা।
পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ সহ দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে যাঁরা সমাবেশের দু-একদিন আগে কলকাতায় পৌঁছবেন তাঁদের খাওয়া দাওয়ার প্রস্তুতি প্রায় শুরু করে ফেলেছে দল। দূরবর্তী জেলার মানুষরা এসে বিধাননগর-কলকাতার কোথায় থাকবেন তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করবেন তৃণমূল স্বেচ্ছাসেবকরা। প্রতিবছর ২১ জুলাই শহিদ দিবসের কেন্দ্রীয় সমাবেশে কলকাতায় আসা কর্মী-সমর্থকদের সাধারণত থাকার ব্যসবস্থা করা হত বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্কে, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে, কসবার গীতাঞ্জলী স্টেডিয়াম সহ নানান জায়গায়। এবার আরও কিছু জায়গায় দূরবর্তী জেলার কর্মী সমর্থকদের থাকার বন্দ্যোবস্ত করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। ‘জনবর্জন সভায়’ আসা জনতাকে ট্রেনে করে কলকাতায় নিয়ে আসতে চাইছেন উত্তরবঙ্গের জেলা নেতৃত্বরা। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং জেলার নেতৃত্বরা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কলকাতা আসা হাওড়া–শিয়ালদহ মুখী বিভিন্ন ট্রেনে আসন সংরক্ষণ শুরু করে দেবেন বলেও দলীয় সূত্রের খবর।