নানুর, লাভপুর, বোলপুর এবং ময়ূরেশ্বর বিধানসভার কয়েকটি এলাকা বাদ দিলে মোটের উপর নির্বিঘ্নে শেষ হল অষ্টম দফার নির্বাচন (West Bengal Election)। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৭৬.০৭ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা ANI। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী বীরভূম জেলায় (Birbhum) ৮৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।
বৃহস্পতিবার অষ্টমদফা (WB Polls Phase VIII) নির্বাচনে বীরভূমের ১১ টি আসনে সকাল থেকে বেশ কিছু বুথে মেশিন খারাপের অভিযোগ আসে। সেই মেশিন পরিবর্তন করে ভোট শুরু হয়। তবে এদিন সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল, নানুর বিধানসভার বেলুটি গ্রাম। সাত সকালেই এক বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর এবং পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বেলা বাড়তেই অশান্তির মাত্রাও বাড়তে থাকে। পুলিশের সামনেই এলোপাথাড়ি বোমাবাজি করা হয়। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একই বিধানসভার সিঙ্গি গ্রামে বিজেপির পোলিং এজেন্ট খোকন দাসের গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল (TMC) আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। নানুর বিধানসভার সাওতা গ্রামে বিজেপি প্রার্থী তারকেশ্বর সাহার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় তারকেশ্বরবাবুকেও। বিকেলের দিকে দাসকল গ্রামের দুই বিজেপি এজেন্টকে মারধর করে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পরে বিজেপি কর্মীরা তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করে। অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের এজেন্টকে মারধর করেছে। বিকেলের দিকে যজ্ঞনগর গ্রামে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে।
তারকেশ্বরবাবু বলেন, “প্রার্থীরই যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে সাধারণ কর্মীরা নিরাপত্তা পাবে কীভাবে।” একইভাবে লাভপুর বিধানসভার হাতিয়া গ্রামের বিজেপি (BJP) সমর্থক কদম হাজরার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের বাড়িতে চড়াও হয়। ওই গ্রামেই পুলিশ দুটি তাজা বোমা উদ্ধার করে। পুলিশ বোমা রাখার অভিযোগে একজনকে আটক করে।
বোলপুর বিধানসভার ঘুড়িষা গ্রামে সকাল থেকে বিজেপি সমর্থকদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে গ্রামে যান বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রামে তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের লোকজন। প্রার্থীর সামনেই বিজেপির এক কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপরেই কুইক রেসপন্স টিমকে খবর দেন অনির্বাণবাবু। খবর পেয়ে কেন্দ্রীয়বাহিনী গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হঠিয়ে দেয়। এরপরেই খবর পেয়ে ইলামবাজারের ডোমনপুর, ধরমপুর গ্রামে যান অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। দুই জায়গাতেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ধরমপুর গ্রামে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় নিরাপত্তারক্ষীরা অনির্বাণবাবুকে সেখান থেকে সরিয়ে গাড়ি তুলে গ্রাম ছাড়ার চেষ্টা করেন। সে সময় পিছন দিক থেকে তাঁর গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এরপরেই ইলামবাজার ছটচক গ্রামে ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। অনির্বাণবাবু বলেন, “তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই তারা আক্রমণ চালাচ্ছে। তবে এর জবাব আমরা ২ মের পর দেব।”
সাঁইথিয়া বিধানসভার পাঁরুই পঞ্চায়েতের জিনাইপুর গ্রামে বিজেপি এজেন্টকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে আবার ছেড়ে দেয়। রামপুরহাট বিধানসভার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে বিজেপির বুথ এজেন্টকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে কমিশনের হস্তক্ষেপে ঢুকতে দেওয়া হয়।
ময়ূরেশ্বর বিধানসভার বীরনগরি গ্রামে বিজেপি প্রার্থীর ভাই শ্যামাপদ মণ্ডলের ভাই বিশ্বজিৎ মণ্ডলকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তার মাথা ফেটে যায়। হাঁসন বিধানসভার তারাপীঠে পুজো দেন কেন্দ্রীয়বাহিনীর আইজি এস কি মহান্তি। এনিয়ে বিতর্ক ওঠে। তারাপীঠের ফুলিডাঙ্গা গ্রামে কেন্দ্রীয়বাহিনীর মারধরে দুই গ্রামবাসী জখম হন।