শ্রীধর মিত্র : লোকসভা নির্বাচন শিয়রে। তারই মধ্যে গোটা দেশের ৫৬টি আসনে রাজ্যসভার নির্বাচন (Rajya Sabha Election 2024) শেষ করতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৫টি রাজ্যের ১৫টি আসনে নির্বাচন হতে চলেছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাজ্যসভায় আগামী ছয় বছরের জন্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হয়ে সংসদে পৌঁছন বাংলার পাঁচ জন। তার মধ্যে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) চার জন এবং প্রধান বিরোধী BJP-র মনোনীত সদস্য একজন। এছাড়াও দেশজুড়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন ৪১ জন।
মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওইদিন বঙ্গের পাঁচটি আসনের জন্য শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের চার প্রার্থী নাদিমূল হক, মমতাবালা ঠাকুর, সুস্মিতা দেব ও বিশিষ্ট সাংবাদিক দিল্লিবাসী সাগরিকা ঘোষ এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপি-র দলীয় মুখপাত্র তথা প্রাক্তন বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। রাজ্য বিধানসভায় ওই পাঁচ প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা না দেওয়ায় রাজ্যসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার তথা বিধানসভার সচিব সুকুমার রায় এই পাঁচ প্রার্থীর হাতে জয়ী শংসাপত্র তুলে দেন ওইদিন।
এপ্রিল মাসের দুই তারিখে বঙ্গের পাঁচ জন রাজ্যসভার সাংসদের ছয় বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁরা হলেন নাদিমূল হক, ডাক্তার শান্তনু সেন, শুভাশিস চক্রবর্তী, আবীররঞ্জন বিশ্বাস এবং তৃণমূল সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভি। উর্দু সংবাদপত্রের মালিক রাজ্যসভার দুইবারের অভিজ্ঞ সাংসদ নাদিমূল হককে আবারও তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য মনোনয়ন দিয়ে সংসদে পাঠাচ্ছেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন ৪১ জন সাংসদ। এর মধ্যে বিজেপি-র ২০ জন সদস্য, জাতীয় কংগ্রেসের ছয় জন, বাংলায় তৃণমূলের চার জন এবং অন্যান্য দলের সদস্যরা। উল্লেখযোগ্য জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে আছেন জাতীয় কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী লোকসভার সাংসদ সোনিয়া গান্ধি, বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রসাদ নাড্ডা, কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সহ অন্যান্যরা। চলতি মাসের ২৭ তারিখে উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক ও হিমাচল প্রদেশের ১৫টি রাজ্যসভার আসনে ভোট হতে হবে।
সোনিয়া গান্ধি (Sonia Gandhi) প্রথমবার রাজ্যসভার সদস্য হলেন রাজস্থান থেকে। এছাড়াও ওই রাজ্য থেকে বিজেপি-র দুই সদস্য চুনীলাল গারাসিয়া ও মদন রাঠোর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। চলতি মাসের ২০ তারিখ মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। সংসদীয় সচিব মহাবীর প্রসাদ শর্মা জানিয়েছেন কোনও প্রার্থী না থাকার দরুণ রাজস্থান থেকে তিন জনকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে, গুজরাট থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (J P Nadda) ছাড়াও গোবিন্দ ভাই ঢোলাকিয়া, মায়াঙ্ক নায়েক ও যশবন্ত সিনহা পার্মার।
ওড়িশা থেকে রাজ্যসভায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, এছাড়াও বিজু জনতা দলের শুভাশিস খুন্তিয়া এবং দেবাশিস সামন্ত্রে। এনিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য বিজেডি-র সমর্থনে ওড়িশা থেকে রাজ্যসভার সদস্য হলেন বর্তমান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। রেল ও টেলি যোগাযোগ উন্নয়নের স্বার্থে বৈষ্ণবকে সমর্থনের কথা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের। মহারাষ্ট্র থেকে ছয় জনের মধ্যে দল বদলু অশোক চৌহ্বান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একজন কংগ্রেসের জয়ী হয়েছেন। এনসিপি-র টিকিটে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস ছেড়ে আসা নেতা মিলিন্দ দেওরা। বিহার থেকে ছয় জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন বিজেপি এবং ইন্ডিয়া জোটের তিন জন করে প্রার্থী। বঙ্গের চার জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রার্থীরা এক যোগে মঙ্গলবার শংসাপত্র নিয়ে জানিয়েছেন যে, বাংলার স্বার্থকে সংসদে তুলে ধরবেন তাঁরা।