Share it

যীশু চৌধুরী (প্রবীণ সাংবাদিক) : শুধু করোনার পরিপ্রেক্ষিতেই নয়, ‘ফিউচার অব ফুড’ – এই প্রশ্নটি উঠেছে প্রায় দশ বছর আগে। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিন ২০১৪ সালের মে মাসে এনিয়ে একটি প্রচ্ছদ কাহিনি করেছিল। তাতে বলা হয়েছে তারা আট মাস ধরে পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে অন্ন জোগাবার জন্যে কী করা উচিত, তা নিয়ে নানা দিক থেকে গবেষণা করেছে। তাতে মোটামুটি দেখা যাচ্ছে গরিব দেশগুলি যেভাবে অনাহারে ছিল তার থেকে খুব একটা মুক্তি ঘটেনি। অন্যদিকে ধনি দেশগুলি শিল্প ও প্রযুক্তিতে যতই উন্নতি করুক খাদ্যের ব্যাপারে তারা পরনির্ভরশীল। তার মানে কৃষি নির্ভর দেশগুলি থেকে বেশি দাম দিয়ে হলেও তারা খাদ্যশস্য কিনতে পারে। অন্যদিকে, গরিব দেশগুলি এব্যাপারে পিছিয়ে। তাই খাদ্য সমস্যা যেমন ছিল তেমনই আছে।

অবশ্য তেমন আছে বলা ভুল। করোনা পরিস্থিতির জন্য অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। আফ্রিকায় বেশ কয়েকটি দেশে নতুন করে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা অনেকেই অনুমান করছেন। এতে দেখা যাচ্ছে সারা পৃথিবীর অন্তত ৮৭ কোটি লোক আগামীদিনে রীতি মতো অনশনে মারা যেতে পারেন। এর মধ্যে যেমন আফ্রিকার কিছু দেশ আছে তেমনই আছে এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকারও কিছু দেশ। আরও একটা বড় ব্যাপার হচ্ছে অনাহারী মানুষের মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। যা আরও ভয়াবহ ভবিষ্যতের দিকে ইঙ্গিত করছে।

আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, খাদ্য বেশি সরবরাহ করা হচ্ছে শহরের দিকে। আমেরিকায় বিশেষ করে দেখা যাচ্ছে গ্রামের চেয়ে শহরে খাদ্য সরবরাহ অনেক বেশি। একে কেউ কেউ বৈষম্যের চূড়ান্ত উদাহরণ বলেও মনে করছেন। করোনা পরিস্থিতিতে এই বৈষম্য মেটানোর কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ২০১০ সালের হিসেবে আমেরিকার মতো শিল্পোন্নত দেশেও ১৮ শতাংশ মানুষ কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত ছিলেন। ২০১৪ সালে এসে দেখা যাচ্ছে সেখানে এই হার ১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। তার মানে গরিব দেশগুলি, যারা কেবল কৃষি উৎপাদন করে তাদের উপর চাপ আরও বাড়বে। করোনা পরিস্থিতির পর তা সামাল দিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার দরকার আছে।

Share it