নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: দোরগোড়ায় দুর্গোৎসব। পাহাড় সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন স্থলগুলিতে বাড়ছে পর্যটকদের ভীড়। প্রায় ২ বছরের ঘরবন্দি জীবন কাটানোর পর কোভিডের আতঙ্ক কাটিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ছে ভ্রমণপিপাষু বাঙালি। দেশজুড়ে টিকাকরণ প্রক্রিয়াও চলছে জোর গতিতে। ফলে ধীরে ধীরে চাঙ্গা হচ্ছে পর্যটন শিল্প। হাসি ফুটেছে ভ্রমণ ব্যবসায়ীদের মুখেও। ইতিমধ্যেই ট্যুরিস্ট স্পটগুলিতে হোটেল বুকিংয়ের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। সবমিলিয়ে পুজোর সময় ভালোরকম ভীড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবছর।
গতবারের থেকে এবারে পর্যটন শিল্পের পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো বলে স্বীকারও করছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। কালিম্পংয়ের পেডংয়ে হোটেল ব্যবসা রয়েছে মৃন্ময় চন্দ্রর। News Wave India-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, পেডং-এ তাঁর ‘কোকুন-দ্য সিল্ক রুট রিসর্ট’টিতে পুজোয় প্রায় বুকিং সম্পূর্ণ। শুধু তাঁর হোটেলই নয়, উত্তরবঙ্গের প্রায় সবকটি ছোট-বড়-মাঝারি হোটেলেই একই ছবি ধরা পড়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ঝাড়গ্রামে যেমন পুজোর ক’টাদিন মানুষ সময় কাটাতে চাইছে, তেমনই দীঘা, মন্দারমনি, বকখালির মতো সমুদ্র তীরবর্তী ভ্রমণস্থানগুলিতেও ‘ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মৃন্ময় বাবুর মতে এবারে অনেক মানুষই ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়ে ফেলেছেন। নিদেনপক্ষে একটি ডোজ প্রায় সকলেই নিয়েছেন। ফলে এবারে করোনা আতঙ্ক অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন ভ্রমণার্থীরা।
কিন্তু, হোটেলগুলি ভীড় সামাল দিতে করোনাবিধি মেনে চলা একান্ত জরুরি। সেক্ষেত্রে হোটেল ব্যবসায়ীরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তা জানতে চেয়েছিলাম আমরা। পর্যটন ব্যবসায়ী মৃন্ময় চন্দ্র জানিয়েছেন, তাঁরা হোটেলে মাস্ক, স্যানিটাইজারের বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছেন। এছাড়াও হোটেল রুম, কিচেন, ভ্রমণের গাড়িগুলিও নিয়মিত স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। পর্যটকরা যাঁরা হোটেলে এসে উঠছেন বা উঠবেন তাঁদেরও মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ।
মৃন্ময়বাবুর দাবি, মানুষও যথেষ্ট সচেতনতার পরিচয় দিচ্ছেন এবারে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে কোনও সমস্যা তৈরি হচ্ছে না। আগামীদিনেও তা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে সব মিলিয়ে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়ানোয় এবার আর বাধ সাধবে না করোনাসুর। বিশেষজ্ঞদের মতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে শিশুদের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৃন্ময় বাবু।
সবমিলিয়ে পর্যটনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হোটেল ব্যবসায়ী মৃন্ময় চন্দ্র। তাঁর মতে এরকম চলতে থাকলে খুব তাড়াতাড়িই পূর্বাবস্থায় ফিরে আসতে পর্যটন শিল্পের দেরি লাগবে না।