কোথাও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ফর্ম নিতে বিশৃঙ্খলা। হুড়োহুড়িতে জখম বেশ কয়েকজন। কোথাও আবার ফর্ম বিক্রি হচ্ছে ৫-১৫ টাকায়। আর করোনা অতিমারি শিকেয় উঠেছে সর্বত্র। মুখে মাস্ক না নিয়েই লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েছেন মহিলারা। প্রথম দিনেই এমন ছবি ধরা পড়েছে বীরভূমের বিভিন্ন এলাকায়।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম বিতরণের কাজ। প্রথম দিনেই মুরারই ১ নম্বর ব্লকে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। নাম নথিভুক্ত এবং ফর্মের জন্য স্থানীয় অক্ষয় কুমার ইনিস্টিটিউশনে লম্বা লাইন পড়ে যায় ভোর থেকে। কারও মুখে ছিল না মাস্ক। স্কুলের গেট খুলতেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। হুড়োহুড়িতে বেশ কয়েকজন মাটিতে পড়ে গিয়ে অল্পবিস্তর জখম হন। মুরারই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য লালু শেখ বলেন, ভোর থেকেই সবাই লাইন দিয়ে রয়েছেন। গেট খুলতেই সামান্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তাতেই কয়েকজন অল্পবিস্তর আহত হন। তবে বড় কিছু নয়”। ঘুষকিড়া গ্রামের বাসিন্দা মিতা কোনাই বলেন, “সকাল ৬ টা থেকে লাইন দিয়ে রয়েছি। এখন পর্যন্ত ফর্ম হাতে পাইনি”। মুখে মাস্ক নেই কেন? প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “নিয়ে এসেছি। কিন্তু পড়ে থাকতে পারছি না। তাই খুলে রেখে দিয়েছি”।
একই ছবি ধরা পড়েছে নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বারা-লোহাপুর চারু বালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। হুড়োহুড়িতে এক মহিলা অসুস্থ হয়ে পরেন। পরে বিডিও স্কুলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য খাইরুল বাসার বলেন, “মানুষকে বিভ্রান্ত করছে সরকার। তৃণমূলের কিছু ছেলে ফর্ম ছিনিয়ে নিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। সেই ফর্ম ধরতে গিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। আবার সেই ফর্ম জেরক্স করে ৫-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব কিছু পুলিশ প্রশাসনের সামনেই চলছে।
ফর্ম নিতে আসা সাকিনা বিবি বলেন, “জেরক্সের দোকান থেকে ৫ টাকা দিয়ে ফর্ম কিনে নিয়ে এলাম। সকাল থেকে লাইন দেওয়ার পরও মারামারি দেখে ভয়ে পালিয়ে গিয়ে ফর্ম কিনলাম”।
নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বিডিও হুমায়ূন চৌধুরী বলেন, “প্রথম দিন বলে বহু মহিলা লাইন দিয়েছেন। আমরা সমস্ত ফর্ম পাঠিয়ে দিয়েছি। বেলার বারার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বভাবিক হয়েছে। তবে ফর্ম বিক্রির কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
অন্য ছবি ধরা পড়েছে মুরারই ২ নম্বর ব্লকে। সেখানেও একইভাবে লম্বা লাইন পড়েছিল। রুদ্রনগরের জালিবাগান মাঠে ক্যাম্প করে ফর্ম বিতরণ করা হয়েছে। রুদ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শিবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মহিলাদের যাতে কোন কষত না হয় সেই জন্য আমরা পানীয় জলের ব্যবস্থা রেখেছি। প্রত্যেককে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। সদ্য সন্তানের মায়েদের জন্য স্তনপানের আলাদা ঘর করে দেওয়া হয়েছে। এখানে কোন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি”।