নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দালালরাজ বন্ধ করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। এবার থেকে গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জমি সংক্রান্ত পরিষেবা দেবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। রাজ্যের মধ্যে সর্বপ্রথম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বৃহস্পতিবার থেকে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে সচেষ্ট সরকার। এক, দালালরাজের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা। দুই, গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের উপার্জনের পথ করে দেওয়া। জমির মিউটেশন সহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানে এবার থেকে স্বল্পমূল্যে পরামর্শ প্রদান করবেন বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত মহিলারা।
বৃহস্পতিবার রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে এই ব্যবস্থার সূচনা করেন জেলাশাসক পি উলগানাথন। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক, সহকারী সভাধিপতি, নারী ও শিশু কর্মাধ্যক্ষ ও অন্যান্য আধিকারিকরা। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই জানেন না, তাঁদের জমি সংক্রান্ত তথ্য বা জটিলতার কথা। তাই তাঁরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসাধুচক্রের দ্বারা প্রতারিত হন। এই সমস্যার সমাধানেই গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পরামর্শ ও অনলাইন আবেদনের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ‘সেবা সখি’ নামে আরও একটি প্রকল্প চালু হয়েছে। এটি বারুইপুর ব্লকের হরদা মোহনা সংঘ প্রাথমিক বহুমুখী সমবায় সমিতির অন্তর্ভূক্ত ২০ জন মহিলাকে বেছে নিয়ে পাঁচ সপ্তাহ ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বয়স্ক, অসুস্থ ও গর্ভবতী মা ও শিশুর সেবা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে প্রথম এইভাবে মানব সেবার পন্থা বেছে নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, এই সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আগামীদিনে আনন্দধারা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এই জেলায় বর্তমানে প্রায় ৮৫ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাজ করছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি মহিলাকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আওতায় আনা হচ্ছে। যাতে তাঁরা উপার্জন করতে পারে। এজন্য বিষ্ণুপুর-২, ডায়মন্ড হারবার-১, পাথরপ্রতিমা, জয়নগর-২-এর প্রতিটি ব্লক থেকে ২টি করে মোট আটটি এবং বারুইপুরের একটি সংঘ সমবায়কে নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত অনেক বিষয়েই ওয়াকিবহাল করা হয়েছে তাদের। এই সংঘ সমবায়ের আওতাধীন যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি আছে সেগুলিকে ১০০ শতাংশ ‘উইমেন ল্যান্ড লিটেরেসি’ নিয়ে প্রশিক্ষণের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক সংঘ সমবায় থেকে ৫ জন করে মহিলাকে বেছে নিয়ে তাঁদের নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এবার থেকে মিউটেশন, কনভার্সন সম্পর্কিত সমস্ত কিছুর বিষয়েই সাধারণ মানুষকে সহায়তা করতে পারবেন তাঁরা। ‘বাংলার ভূমি’ ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ওই মহিলারা পরিষেবা প্রদান করবেন খুব সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে।