Share it

হঠাৎ করেই ট্রেনের যাত্রা পথ পরিবর্তন করায় বিপাকে মুম্বই গামী দুই শতাধিক যাত্রী। স্টেশনে পৌঁছে ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। বিক্ষোভ দেখানো হয় স্টেশন ম্যানেজার এবং এরিয়া অফিসারকে ঘিরে। রেল কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন যাত্রীরা। যাত্রী বিক্ষোভের ফলে ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়। পরে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাসে ফিরে যান যাত্রীরা।

কামাখ্যা-মুম্বাই ২২৫১২ লোকমান্য তিলক কর্মভূমি এক্সপ্রেস। এই ট্রেনেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ মুম্বাইয়ে যান কাজের খোঁজে। কেউ সোনার দোকানের কারিগর, কেউবা রাজমিস্ত্রির যোগানদার হিসাবে কাজ করেন। এই ট্রেনেই সহজে গন্তব্যস্থলে পৌঁছন যায়। তাই রুজির টানে এরাজ্যের কর্মহীন মানুষ কর্মভূমি ট্রেনে পারি দেন মুম্বই। প্রতি রবিবার সকাল ১০.২১ মিনিটে ট্রেন রামপুরহাট স্টেশনে ঢোকার কথা। সেই মতো শতাধিক যাত্রী রামপুরহাট স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে রেলের মাইকে ট্রেনের যাত্রা পথ ঘুড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। বেশ কিছু ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীও ট্রেন ধরার জন্য স্টেশনে ছিলেন।

মুরারই থানার চাতরা গ্রামের বাসিন্দা সফিকুল শেখ বলেন, “মুম্বাইয়ে কাজ করে বাড়িতে টাকা পাঠায়। ওই টাকাই সংসার চলে। কিন্তু একমাস ধরে কর্মভূমি ট্রেনের টিকিট কাটছি আর ট্রেন বাতিল হচ্ছে। এদিন ষ্টেশনে এসে শুনলাম ট্রেনের যাত্রা পথ ঘুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আগে আমাদের কোনভাবে জানান হয়নি। ফলে একমাস ধরে কর্মহীন হয়ে বাড়িতে বসে রয়েছি। কোন আয় নেই। তাই আমরা দাবি জানালাম টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।”

মল্লারপুর থানার হাজিপুরের বাসিন্দা সাইরুল শেখ বলেন, “আমরা মুম্বই যাই বলে দুটো খেতে পাই। কিন্তু এদিন সকালে ষ্টেশনে পৌঁছে জানতে পারলাম ট্রেন আজিমগঞ্জ হয়ে ঘুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে স্টেশনে মাস্টার বললেন বর্ধমান পর্যন্ত ট্রেন দেওয়া হবে। কিন্তু দুপুর ১২ টার পর বলছে ট্রেন দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা দাবি করলাম টিকিটের টাকা ফেরত দিতে হবে। আমাদের আন্দোলনের জেরে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।”

রামপুরহাট স্টেশনের এরিয়া অফিসার পবিত্র কুমার মণ্ডল বলেন, “লুপ লাইনে কাজ চলায় ওই ট্রেনের যাত্রা পথ আজিমগঞ্জ হয়ে ঘুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই বার্তা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া যাত্রীদের মোবাইলেও ট্রেনের যাত্রা বদলের বার্তা পাঠান হয়েছে। তারপরও এখানে কিছু যাত্রী ঝামেলা করছে। আমাদের ঠেলাঠেলি করছে। বিক্ষোভকারীরা ট্রেন চলাচলের সমস্ত মাধ্যম বিকল করে দেওয়ায় বেশ কিছু ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এখানে আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা বলেছি যারা অন লাইনে টিকিট কেটেছেন তাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। যারা কাউন্টারে টিকিট কেটেছেন তারা এদিনই পেয়ে গিয়েছেন।”

সবশেষে তিনি জানিয়েছেন “১৯৯২ সালে Standard Chartered Bank-এর চাকরি ছেড়ে মুম্বই পালানোর সময় যা করেছেলাম আজও তাই করলাম! চললাম…।” দীর্ঘ এই পোস্টের সঙ্গে আসানসোলের বিজেপি সাংসদ দিয়েছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে বিখ্যাত গান, “এক গোছা রজনীগন্ধা হাতে নিয়ে বললাম, চললাম…”

Share it