ফিতে কেটে নবরূপে নির্মিত প্রধান গেটের দ্বারোদঘাটন করছেন মাননীয় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা।
Share it

রুনা খামারু, কলকাতা: দেড়শ বছরে পা দিল দেশের সবচেয়ে পুরনো ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিচালিত আলিপুর চিড়িয়াখানা। পশ্চিমবঙ্গ তথা তিলোত্তমার গর্বের এই চিড়িয়াখানার সার্ধ শতবর্ষ মঙ্গলবার পালন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। ঐতিহ্যশালী আলিপুর চিড়িয়াখানার দেশড় বছরের ইতিহাস ও পরম্পরার উপর একটি বই প্রকাশ করা হয় এদিন। উদ্বোধন করা হয় আলিপুর রোড ও ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যাভেনিউয়ের উপর নতুন করে সাজিয়ে তোলা দুটি গেট। ফিতে কেটে নতুন গেটের উদ্বোধন করেন মাননীয় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মাননীয় বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, বিধায়ক তথা ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত, ভাইস চেয়ারম্যান ড. মারিয়া ফার্নান্ডেজ, বনদপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব শ্রী মনোজ কুমার আগরওয়াল, প্রিন্সিপাল চিফ কনর্জারভেটর অফ ফরেস্ট এবং রাজ্য ফরেস্ট ফোর্সের প্রধান শ্রী নীরজ সিংঘল, ওয়েস্ট বেঙ্গল জ্যু অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি সৌরভ চৌধুরী, স্থানীয় কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা।

বিশেষ এই দিনটিকে রাজ্য জ্যু অথরিটির অধীনে থাকা কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা করেন মাননীয় বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। চিড়িয়াখানার কর্মীদের বিমার আওতায় আনার কথা ঘোষণা করেন বনমন্ত্রী। অক্টোবর মাস থেকেই লাগু হবে নতুন এই সুবিধা। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার কর্মীদের সুরক্ষার স্বার্থে বছরে ৫ লক্ষ টাকার বীমা চালু করার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।

এছাড়া এদিনের অনুষ্ঠানে আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রথম ভারতীয় সুপারিনটেন্ডেন্ট রায় বাহাদুর রাম ব্রহ্ম সান্যালের মূর্তি উন্মোচন করেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। চিড়িয়াখানার প্রথম ও সবচেয়ে বেশি দিনের কর্তব্যরত সুপারিনটেন্ডেন্টের উপর একটি গবেষণা মূলক বইয়ের নতুন সংস্করণ প্রকাশ করা হয় এদিন। রায় বাহাদুর রাম ব্রহ্ম সান্যালের উত্তরাধিকারী সোমনাথ সান্যাল বলেন, “এই দিনটি তাঁদের পরিবারের সকলের কাছে অত্যন্ত গর্বের দিন। একটা মানুষ কর্মদক্ষতার জোরে কতদূর যেতে পারেন, স্বর্গীয় রায় বাহাদুর রামব্রহ্ম সান্যাল তাঁর প্রকৃষ্ট উদাহরণ”।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রথম ভারতীয় সুপারিনটেন্ডেন্ট রায় বাহাদুর রাম ব্রহ্ম সান্যালের উপর গবেষক ড. সুবিদিতা কুণ্ডু। আগামীবছর বইমেলায় এবিষয়ে তাঁর লেখা বই প্রকাশিত হতে চলেছে বলেও জানালেন তিনি।

মূল অনুষ্ঠানের শেষে চিড়িয়াখানার ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কেক কেটে বিশেষ দিনটি উদযাপন করেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আলিপুর চিড়িয়খানায় আয়োজিত অঙ্গন ও ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী স্কুল পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সার্টিফিকেট ও উপহার। চিড়িয়াখানার অবসরপ্রাপ্ত অধিকর্তারা তুলে ধরেন কর্মরত অবস্থায় সেখানে কাজ করতে গিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। এরপর চিড়িয়াখানার সবচেয়ে পুরনো ও অভিজ্ঞ অ্যানিম্যাল কিপার মোতিলাল রাম ও সিউপ্রসাদ কাহার তুলে ধরেন চিড়িয়াখানায় তাঁদের কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা। সমগ্র অনুষ্ঠানটির সুষ্ঠু সঞ্চালনা করেন ডেপুটি ডিরেক্টর ড. পিয়ালি চট্টোপাধ্যায়।

সবশেষে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট ও অন্যান্য অতিথিদের ও চিড়িয়াখানার কর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এদিনের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করে চিড়িয়াখানার অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত। দেড়শ বছর উপলক্ষে বছরভর নানা অনুষ্ঠান পালনের কথা ঘোষণা করেন তিনি। অদূর ভবিষ্যতে আলিপুর চিড়িয়াখানা দেশের এক নম্বর জ্যুলজিক্যাল গার্ডেন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।

Share it