নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও স্কুলে গিয়েছেন সোমা দাস। সুপ্রিম রায়ে প্রায় ২৫৭৫২ জনের ছেলেমেয়ের চাকরি গিয়েছে। তবে সোমার চাকরি রয়েগিয়েছে। তবুও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে খুশি নন সোমা সাহা। তাঁর দাবি, যোগ্যদের চাকরি যাওয়া ঠিক হয়নি।
সোমা দাস। তাঁর বাড়ি বীরভূমের নলহাটির পাইকপাড়া। এস এস সিতে দুর্নীতির অভিযোগে দিনের পর কলকাতার খোলা আকাশের নিচে আন্দোলন করেছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাস। খবর পেয়ে তাঁকে আদালতে ডেকে পাঠান প্রাক্তন বিচারপরি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি মানবিক দিক থেকে সোমা দাসকে দ্রুত চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরেই বীরভূমের নলহাটির মধুরা হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগ দেন সোমা দাস। চাকরি করলেও এদিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে তাঁর নজর ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে এ দিন সুপ্রিম কোর্ট প্রায় ২৫৭৫২ জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু চাকরি যায়নি সোমা দাসের। নিজের চাকরি থাকলেও এই রায় শুনে খুশি নন তিনি। তিনি জানালেন, এই রায় কোনওকালেই কাম্য ছিল না। কারন এই প্যানেলে এমন অনেকে ছিলেন যারা কোনরকম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। শিক্ষামন্ত্রী দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। যারা দুর্নীতি করেছে তাদের চাকরি যাওয়া উচিত। তবে যোগ্যদের বিষয়টা সরকারের ভাবা উচিত ছিল। কিন্তু সরকার তাদের নিয়ে কোন চিন্তাভাবনা করেনি। শিক্ষাকে দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে। যোগ্য ব্যক্তিদের চাকরি দিতে হবে”।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এস এস সির ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করা হয়েছে। শুধুমাত্র সোমার চাকরি বহাল থাকল। এই রায়ে যোগ্যদের কথা ভেবে বিষাদে ভারাক্রান্ত সোমার মন। তিনি বলেন, ‘এই রায় কোনওদিন কাম্য ছিল না। প্যানেলের মধ্যে অধিকাংশের বিরুদ্ধেই কোনও অভিযোগ ছিল না। কিন্তু সঠিক তথ্য কমিশনের কাছে ছিল না। এক এক সময়ে এক এক রকম তথ্য আদালতে দেওয়া হয়েছে। সঠিক তথ্য না মেলার কারণেই হয়তো এই রায়, যা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। অনেকের পরিবার এই চাকরির ভরসায় চলে। যাঁরা দুর্নীতি করে চাকরি পাননি, তাঁরা আবার কঠিন সংগ্রামের মধ্যে পড়লেন। যোগ্যদের চাকরি বহাল থাকলে ভালো হত।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে সোমা এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন। মেধা তালিকাতে নাম থাকা সত্ত্বেও তিনি চাকরি পাননি। সেই নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও হয়। চাকরির দাবিতে রাজপথে ধর্নাতেও বসেছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত এই বিষয়টি জানতে পেরে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের কাছে ‘অনুরোধ’ করেছিলেন সোমাকে চাকরি দেওয়ার জন্য। ২০২২ সালের জুন মাসে সোমাকে চাকরির সুপারিশপত্র দিয়েছিল কমিশন।