লকডাউনে (Lockdown) জমায়েতের উপর কার্যত কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। সরকারি নির্দেশ মেনে (Corona protocol) সবজি ব্যবসায়ীদের উপর পুলিশি অত্যাচার শুরু হলেও দেদারে চলছে পশুর হাট। সামাজিক দূরত্ববিধিকে (Social Distance) শিকেয় তুলে, মুখে মাস্ক ছাড়াই চলছে পশু কেনাবেচা। সবজি বাজার সরাতে পুলিশের তৎপরতা যতটা দেখা গিয়েছিল, গরুর হাট বন্ধের ব্যাপারে ততটাই নিষ্ক্রিয় প্রশাসন। অভিযোগ, ওই পশু হাটের মালিক খোদ তৃণমূল নেতা আকবর আলি সেজন্যই এই নিষ্ক্রিয়তা। যদিও পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে রামপুরহাট থানার পুলিশ।
রামপুরহাটে পশু হাট (Cattle Market) চলে শহরের বাইরে জাতীয় সড়কের ধারে। হাটের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রয়েছে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সেখানেই প্রতি বৃহস্পতিবার চলে পশু হাট। ওই পশু হাটের মালিক রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের আয়াস গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য, দাদপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা আকবর আলি। ফলে সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করেই লকডাউনেও পশু হাট চলছে বলে অভিযোগ। এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক হাজার মানুষ গাদাগাদি করে পশু হাটে কেনাবেচা করেন। তাদের কারও মুখে ছিল না মাস্ক। মানা হয়নি দূরত্ববিধি।
এনিয়ে আকবর আলি বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনেই সকাল থেকে ১০ টা পর্যন্ত হাট খোলা হয়েছে। হাট বসলে ক্রেতা বিক্রেতা তো আসবেই। প্রশাসন বন্ধ করতে বললে বন্ধ করে দেব। এতে অন্যায় কিছু দেখছি না।”
রামপুরহাট শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সাহাজাদা হোসেন কিনু বলেন, “আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হয়েও সরকারি নিয়ম মেনে দোকান বন্ধ রাখছি। যদি কেউ নিয়ম লঙ্ঘন করছে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। আম, লিচু ব্যবসায়ীদের ফল তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আর পুলিশের নাকের ডগায় হাজার হাজার লোকের জমায়েত করে চলছে পশু হাট। সরকারি নির্দেশ ভাঙছেন শাসক দলের নেতারাই। তাই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারছে না। ব্যবসায়ীদের আটক না করে সাহস থাকলে পুলিশ হাট মালিককে আটক করুক।”
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক দেবব্রত দাস বলেন, “সরকার সমস্ত জমায়েত বন্ধ করে দিয়েছে। বিয়ে বাড়ি, শবযাত্রীর ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে। এরপরও পশু হাটের জমায়েত আমাদের লজ্জা। এই হাট শুধু ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করবে তা নয়, এদের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মহল্লায় মহল্লায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পরবে। পুলিশ প্রশাসন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উপর কঠোর মনোভাব নিলেও সকাল থেকে কয়েক হাজার মানুষের পশু হাটে জমায়েত হলেন অথচ পুলিশ দেখতে পেল না? পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।”
জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, “ওই পশু হাট অবৈধ। জেলায় তিনটি হাট রয়েছে। সেগুলি হল ইলামবাজার, সাঁইথিয়া ও লোহাপুর। তাছাড়া এই পরিস্থিতিতে কেন সেখানে ওই পরিমাণ জমায়েত করা হল তা দেখার জন্য মহকুমা শাসক বলেছি।”