উরুস উৎসব বন্ধ
Share it

করোনা অতিমারির কারণে বন্ধ করে দেওয়া হল কালা বাবার উরুস উৎসব বা সর্বধর্ম মিলন মেলা। ফলে এবার অনাড়ম্বর ভাবে পালিত হল উৎসব। পসরা সাজিয়ে কোন দোকান বসতে দেওয়া হয়নি। অতিমারির কারণে আসেননি দূরদূরান্তের ভক্তরা। কালা বাবা কমিটির বক্তব্য, মানুষ বাঁচলে মেলা বার বার হবে।

বীরভূম জেলার রামপুরহাট থানার অন্তর্গত কাষ্ঠগড়া গ্রাম। এই গ্রামের ঐতিহ্য হচ্ছে কালা পীরের মাজার। বহু বছরের পুরনো এই পীর বাবার মাজার শরীফ এলাকাবাসীর কাছে কালা বাবা কিংবা বাবা কালা নামে পরিচিত। এই কালাবাবার মাজারের অবস্থান কাষ্ঠগড়া-গুগ গ্রামের মাঝে। রাস্তার ধারে মাজার অবস্থিত। তবে চারিদিকে রয়েছে ফাঁকা মাঠ। মাজারের চারিদিক গাছ গাছালিতে এলাকার পরিবেশ অনেকটা মনোরম। ফলে অনেকে পুজো দিতে এসে রান্না করে খাওয়াদাওয়া সেরে বাড়ি ফেরেন।

মাজারের ধারে কাছে কোনো জনবসতি নেই। বছরের বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এই মাজারে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। হিন্দু-মুসলিম সহ সমস্ত সম্প্রদায়ের কাছে আরাধ্য। তাই মনস্কামনা পূরণের জন্য অধিকাংশ ভক্ত এখানে মাটির ঘোড়া বাবার মাজারের সামনে রেখে যান। কেউ কেউ আবার দুধ, কলা, ফুল, ধূপবাতিও দেন। অনেকেই আবার মনস্কামনা পূরণ হওয়ায় চাদর চড়ান। বছরের এই একটি দিন মাজারের সামনে প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়। বসে মেলা। নাগরদোলা, চরকিতে চড়ে সারাদিন আনন্দ উপভোগ করত কচিকাচারা। এককথায় কালা বাবার উৎসবে মিলন উৎসবে পরিণত হত।

কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে গতবছর থেকে বন্ধ মেলা। এবার মেলা না বসলেও নিজ নিজ ধর্মচারণে কোন বাধা ছিল না। তবে জমায়েত ছিল একেবারেই নগণ্য। মাজারের দেখভালের দায়িত্বে থাকা দেওয়ান বা খাদিম করিম দেওয়ান বলেন, “দেশ জুড়ে করোনা অতিমারির কারণে মৃত্যু মিছিল চলছে।  সমস্ত কিছুই বন্ধ। মানুষ বেঁচে থাকলে তবেই তো মেলা। মানুষ বেঁচে থাকলে মেলা আবার হবে। তাই বৃহস্পতিবার আমরা গত বছরের মতো এবারও মেলা বা দোকান বন্ধ করে দিয়েছি। সরকারি বিধি মেনেই আমরা আজকের দিনটা পালন করলাম”।

Share it