একরকম জনশূন্য সুন্দরবন। পযটকদের আনাগোনা নেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য পর্যটকহীন। খাঁ খাঁ করছে চারিদিক। পাখিরালয়, ঝড়খালি, ডাবু, সজনেখালি, দো-বাঁকী, বনি ক্যাম্প, কলস, বকখালি সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলি খালি পড়ে আছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসা।
গত বছরও টানা লকডাউনের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিল এই ব্যবসা। এরমধ্যে ভয়াবহ ঘূর্ণীঝড় আমফানের তাণ্ডবে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। তারপরেও সবকিছুকে উপেক্ষা করে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল সুন্দরবন। আর এরইমধ্যে দেশজুড়ে আছড়ে পড়েছে করোনা দ্বিতীয় ঢেউ। জারি হয়েছে আংশিক লকডাউন। লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ। ফলে মন্দা দেখা দিয়েছে সুন্দরবন জুড়ে পযটন ব্যবসায়।
প্রথম পর্যায়ে লকডাউন উঠে যাওয়ার পরেই পর্যটকদের আনাগোনা ধীরে ধীরে বাড়ছিল। কিছুটা হলেও মন্দা কাটিয়ে আশার আলো দেখছিলেন এখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতি নতুন করে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। হোটেলগুলিকে প্রতিনিয়ত স্যানিটাইজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। সেইসঙ্গে হোটেল কর্মীদের সকলকে মাস্ক পরে থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরেও পর্যটক নেই সুন্দরবনে।
কাছেপিঠে ভ্রমণের ডেস্টিনেশন বলতে সুন্দরবনকে আগে বেছে নেন ভ্রমণপিপাসুরা। আগে সুন্দরবনে আসার ব্যাপক সমস্যা ছিল। মাতলা,হোগল, হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীর ওপর ব্রিজ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর সেই সমস্যা এখন আর নেই। তাই অনায়াসে পর্যটকরা দু-একদিনের ভ্রমণের জন্য সুন্দরবনে ঘুরতে চলে আসেন। ছোট বড় মিলিয়ে কয়েকশো আবাসিক হোটেল রয়েছে এই সুন্দরবনে। রয়েছে কয়েক হাজারের বেশি দোকান। কিন্তু, বারবার বিপর্যয়ের কারণে পর্যটকরা বিমুখ হচ্ছেন। তারই প্রভাব পড়ছে সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায়।