দুয়ারে সরকারের পর এবার ‘পাড়ায় সমাধান’ নাম দিয়ে আরও একটি কর্মসূচি চালু করল সরকার। ওই কর্মসূচিতে স্থানীয় স্তরের ছোট ছোট কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বিশ্বভারতীকে দেওয়া রাস্তা ফিরিয়ে নিয়ে সংঘাতে জড়াল রাজ্য।
দুয়ারে দুয়ারে সাফল্যর পর এবার পাড়ায় পাড়ায় সমাধান। সোমবার বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই প্রকল্পে স্থানীয় স্তরে কালভার্ট, ঐচ্ছিক ক্লাসঘর, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র, ছোটখাটো রাস্তা, পাড়ায় পাড়ায় শৌচালয়, জলের পাইপলাইনের মতো ছোট ছোট কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। নতুন বছরে ২ জানুয়ারি থেকে ওই প্রকল্প চালু হবে। শেষ হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সামনে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে তাঁর আগে যদি পাড়ায় পাড়ায় সমাধানে কাজ শেষ করা না যায় তাহলে আবেদনকারীকে ফোনে জানিয়ে দেওয়া হবে কতটা কাজ হয়েছে।” মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ইতিমধ্যে ছোট ছোট কাজের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে দশ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এই প্রকল্পের জন্য আলাদা ট্যাক্স ফোর্স গঠন করা হয়েছে। তারাই সমস্ত কাজ পর্যালোচনা করবে।”
সোমবার পাঁচামি পাথর এলাকায় ৪৪ একরের মধ্যে ফাঁকা থাকা ২৬ একরে কাজ শুরুর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এলাকার মানুষের সমস্যা না করে কাজ শুরুর অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, “কয়লা উত্তোলন শুরু হলে এলাকার প্রায় এক লক্ষ বেকার চাকরি পাবে। যাদের জমি রয়েছে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হবে। ওখানে দুই মিলিয়ন কয়লা রয়েছে। সেই কয়লা তুলতে পারলে দেশে ১০০ বছর বিদ্যুতের কোন সমস্যা হবে না।”
এদিন বিশ্বভারতীকে দেওয়া পূর্ত দফতরের রাস্তা ফেরত নেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে বসে আশ্রমিকদের দেওয়া একটি চিঠি পড়ে শোনান তিনি। চিঠিতে আশ্রমিকরা লিখেছেন শিক্ষা ভবন থেকে শান্তিনিকেতন –শ্রীনিকেতন সংযোগকারী রাস্তা কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগে সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ভারি গাড়ি নিষিদ্ধ ছিল। এখন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওই রাস্তা পূর্ত ছিল। বিশ্বভারতীর অনুরোধে আমরা রাস্তা তাদের দিয়েছিলাম। কিন্তু বোলপুরে আসার আগে আমরা ওই রাস্তা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্বভারতীকে চিঠি লিখেছি।” একই সঙ্গে এদিন বোলপুরে নবনির্মিত বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বপন দত্ত’র নাম উপাচার্য হিসাবে ঘোষণা করেন। তাঁকে নির্দেশ দেন, বিশ্বভারতীর আদলে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে।
এদিন প্রশাসনিক সভা থেকে বক্রেশ্বরের উন্নয়নে তিন কোটি, ফুল্লরার উন্নয়নে এক কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারাপীঠ, বীরচন্দ্রপুরের উন্নয়নেও টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। সেই সঙ্গে জেলায় মোরব্বা হাব তৈরির সম্ভবনার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।