বিধানসভা নির্বাচনের পর সন্ত্রাসের জেরে তটস্থ বীরভূমের লাভপুর বিধানসভার বিজেপি (BJP) নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা। অধিকাংশ নেতারই মোবাইল বন্ধ। এরই মাঝে মাইকিং করে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করল বিজেপির বেশ কয়েকটি পরিবার।
মঙ্গলবার সকালে এলাকার বাজারে কয়েকজন কিশোর ও তরুণ একটি টোটোতে বিজেপির পতাকা ঝুলিয়ে মাইক নিয়ে বের হয়। তাদের হাতে থাকা একটি কাগজ লেখা দেখে তারা মাইকে বলতে থাকে, “আমরা লাভপুর বিধানসভার বিপ্রটিকুরী গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। আমরা বিজেপি কর্মীবৃন্দ ২০২১ সালে উন্নয়ন নিয়ে মিথ্যা প্রচার করে গ্রামে উত্তেজনা ও গণ্ডগোলের সৃষ্টি করেছিলাম। এই মিথ্যা প্রচার করার জন্য ক্ষমা চাইছি। শপথ করছি ভবিষ্যতে এই মিথ্যা অপপ্রচার আর করব না। গ্রামবাসীদের কাছে ভুল শিকার করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সেইসঙ্গে বিধায়কেরে কাছে অনুরোধ আমরা যেন মা মাটি মানুষের সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে থেকে কাজ করতে পারি এবং তৃণমূলে (TMC) যোগদান করতে পারি। জয় বাংলা। মা মাটি মানুষ জিন্দাবাদ।”
এই প্রচার মাইক গ্রামের আনাচে কানাচে প্রচার চালায়। যদিও কারা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করছেন তা মাইকে বলা হয়নি। এনিয়ে এলাকার বিজেপি নেতাদের ফোনে করলে দেখা যায় অধিকাংশ নেতার ফোন বন্ধ। একজনকে ফোনে পাওয়া গেলেও তিনি নাম প্রকাশ করা যাবে না শর্তে বলেন, “লাভপুর বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল এবং পুলিশ মিলে যৌথ সন্ত্রাস চলছে। পুলিশ নেতাদের ফোন করে খুনের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি ওই খুনের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের নাম জড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দিচ্ছে।”
এদিন দুপুরে লাভপুর থানার ওসি পার্থ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে যান দলের জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা সহ একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু ওই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেননি ওসি কিংবা নিদান পক্ষ কোন অফিসার। ধ্রুব সাহা বলেন, “লাভপুর বিধানসভা এলাকায় গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। আমাদের নেতা কর্মীরা ভয়ে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। কারও বাড়ি আমরা যেতে পারছি না। কারণ কারও বাড়ি গেলে রাতে তাদের তুলে নিয়ে পেটাবে। আমরা থানায় গেলাম। কিন্তু কোনও সৌজন্যতা পর্যন্ত পুলিশ দেখায়নি। আমরা কোন রাজ্যে বসবাস করছি বুঝতে পারছি না। বিষয়টি রাজ্যে জানাব। যারা দল ছাড়ার কথা মাইকিং করে বলছে তারা দিন দুয়েক আগেই আমাদের হাত ধরে গ্রামে ফিরেছে। এখন তৃণমূলের অত্যাচারে বাধ্য হয়ে মাইকিং করে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করছে।”
এব্যাপারে লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ রায় ওরফে রানা সিংহকে ফোন করা হলে তিনি হ্যালো হ্যালো বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।