কলকাতায় প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হয়। এরমধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য বা অপচনশীল বর্জ্যই ৫০০ টনের বেশি। বাকিটা পচনশীল বা জৈব বর্জ্য। এই বিশাল পরিমাণ বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের সম্পূর্ণ উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরনিগম। কলকাতা পুরনিগমের বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সদস্য দেবব্রত মজুমদারের নেতৃত্বে KMC গত ফেব্রুয়ারি মাসে শহরের ২০ টা ওয়ার্ডে এই উৎসে জঞ্জাল বিভাজন প্রক্রিয়া চালু করা হয়। এর আগেই এই একই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল আরও ৭ টা ওয়ার্ডে।
এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত প্রতিনিধিদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে কলকাতা পুরনিগমের ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ইতিমধ্যেই ২৭টি ওয়ার্ডে প্রতিটি বাড়িতে দুটো আলাদা আলাদা রঙের বালতি দেওয়ার কাজ শেষের দিকে। শুরু হয়েছে তা আলাদা আলাদা করে সংগ্রহ করার কাজও। সবুজ বালতিতে ফেলতে হচ্ছে জৈব আর্দ্র বর্জ্য পদার্থ। এবং নীল বালতিতে ফেলতে হচ্ছে অজৈব কঠিন বর্জ্য।
এতে সুবিধা হচ্ছে পুরকর্মীদেরও। তাঁরা দুটি দলে ভাগ হয়ে অতি সহজেই বর্জ্য পর্দার্থগুলিকে আলাদা করে প্রক্রিয়াকরণের জন্য সংগ্রহ করতে পারছেন। সবুজ বালতির বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে প্রতিদিন। নীল বালতির বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে ৩ থেকে ৪দিন পরপর। অজৈব বর্জ্যগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
পুরসভার এই বিশাল রাজসূয় যজ্ঞে সামিল করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠনকে। প্রতিটা বাড়ি থেকে অপচনশীল জঞ্জাল সংগ্রহ করা ও সচেতনতা গড়ে তোলার কাজে নিযুক্ত হয়েছেন শহরের বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা। এমনটি একটি সংগঠনের সদস্য জানিয়েছেন, তাঁরা নাগরিকদের বাড়িবাড়ি সচেতনতা প্রচার থেকে শুরু করে সাফাইকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া সহ বেশ কয়েকটি কাজে সহায়তা করছেন। সংগ্রহকারী সংস্থাগুলোর তরফ থেকে তাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন এই কাজ কঠিন হলেও ইতিমধ্যেই খুব ভালো সাড়া মিলেছে সাধারণ মানুষের তরফে।
মাঝে বিধ্বংসী আমফান ঘূর্ণিঝড়ের জন্য এই প্রক্রিয়া কিছুটা ব্যাহত হলেও সম্প্রতি নতুন উদ্যোগে এই কাজ শুরু হয়েছে। বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে। একই সাথে মানুষের কাছে আবেদন রাখা হয়েছে এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার। অল্প কিছুদিনের মধ্যে কলকাতা পুরসভার বাকি ওয়ার্ডগুলিতেও এই উদ্যোগ চালু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী পুরকর্তৃপক্ষ।