নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: তারকেশ্বর ব্লকের আস্তাড়া গ্রামে সম্প্রতি দুই দিনের একটি কৃষি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। ভারত সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কলকাতাস্থিত কেন্দ্রীয় আইপিএম অফিস এই মানব সম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচির আয়োজন করে। মোট ৫০ জন প্রগতিশীল কৃষক এই শিবিরে অংশগ্রহণ করেন, এলাকায় এই ধরনের প্রশিক্ষণ শিবির এই প্রথম।
আইপিএম কথার অর্থ সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ। আস্তাড়া রামকৃষ্ণ আশ্রমের ওই শিবিরে আইপিএম-এর কলকাতা অফিসের উপনির্দেশক অনিতা দেবি বলেন, “ক্ষতিকারক কীটনাশকের প্রয়োগ কমাতে কৃষকদের আইপিএম প্রযুক্তি সম্পর্কে অবগত করতেই এই উদ্যোগ। এতে কৃষকরা কীটনাশক মুক্ত কৃষি ও উদ্যানজাত ফসল উৎপাদন করতে পারবেন। আইপিএমের বিভিন্ন পদ্ধতি যথা – ব্যবহারিক পদ্ধতি, যান্ত্রিক পদ্ধকি, জৈবিক পদ্ধতি ও রাসায়নিক পদ্ধতি শেখানো হয় এখানে। বিভিন্ন ফাঁদ যেমন – ফেরোমোন ফাঁদ, আঁঠাল ফাঁদ, ফল ছিদ্রকারী পোকা নিয়ন্ত্রণ ফাঁদ তৈরির কৌশল হাতে কলমে শেখানো হয়। এগুলি ব্যবহার করে তাঁরা সঠিক পরিমাণে, সঠিক মাত্রায়, সঠিক সময়ে ও সঠিক ফসলে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে, রাসায়নিক কীটনাশনের ব্যবহার কমবে ও পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে।”
আইপিএম-এর কলকাতা অফিসের সহ-নির্দেশক শ্রী প্রিয়ব্রত মহন্ত বলেন, “বর্তমানে কৃষকরা অতিরিক্ত রাসায়নিক, কীটনাশক এবং সার ব্যবহার করছেন। ফলে, পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এবং মানুষ ও প্রাণীর স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এই আইপিএম পদ্ধতিতে চাষ করলে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমে, চাষের খরচ কমে, ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় তাই কৃষকরা এতে বেশি লাভবান হবেন।”
স্থানীয় সমাজসেবা কর্মী শ্রী সঞ্জয় ঘাঁটি সহ অন্যান্যরা বলেন, “এই এলাকার অধিকাংশ কৃষক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রয়োগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই তাঁদের। দোকানদার ও বিভিন্ন কম্পানির সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভদের কথা মতো জমিতে যথেচ্ছ পরিমাণে কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকেন। ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি দুই দিনের এই প্রশিক্ষণের পর তাঁরা সঠিক পরিমাণে কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করতে অনেকটাই সক্ষম হবেন। ফলে এই এলাকার কৃষক তথা গ্রামবাসীদের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে। পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে এবং উন্নত মানের ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবেন। চাষিদের মধ্যেও এনিয়ে প্রবল উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে।”