মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও হিংসা থামার লক্ষণ নেই বীরভূমে। বৃহস্পতিবার বেলার দিকে ফের বিজেপি–তৃণমূল সংঘর্ষে জখম হন উভয়পক্ষের সাত জন। তাঁদের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বীরভূমের রামপুরহাট বিধানসভার তিলাই গ্রামে তৃণমূলের আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়েছেন ২২২টি ভোট। অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী শুভাশিস চৌধুরী পেয়েছে ২০৬ টি ভোট। ফল বের হওয়ার পর থেকেই গ্রামে চাপা উত্তেজনা শুরু হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সন্ধ্যা হলেই তৃণমূলের লোকজন বিজেপি কর্মী সমর্থকদের শাসিয়ে যায়। এমনকি বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত এলাকায় পানীয় জলের অকেজো টিউবওয়েলও সংস্কার করা হয়নি। ফলে চরম পানীয় জল সংকটে ভুগছেন গ্রামের মানুষ।
অবশ্য পাল্টা অভিযোগ তৃণমূলের। গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে এক কিশোর মাঠে শৌচকর্ম সারতে গেলে তৃণমূলের লোকজন তাকে মারধর করে। এরপরেই দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। লাঠি, বাঁশ নিয়ে দুই পক্ষের আক্রমণে জখম হয় দুই পক্ষের সাত জন। খবর পেয়ে রামপুরহাট থানার পুলিশ গ্রামে গিয়ে উভয়পক্ষের চারজনকে আটক করে।
বিজেপি সমর্থক অন্যবালা দাস বলেন, “আমাদের এক ছেলে মাঠে শৌচকর্ম সারতে গিয়েছিল। সে সময় তৃণমূলের লোকজন ওর মাথায় আঘাত করে। এরপরেই গ্রামের লোকজন ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। আমাদের দেখে তৃণমূলের আরও লোকজন এসে আমাদের বেশ কয়েজনকে মাটিতে ফেলে মারে তারা। এক বৃদ্ধও তাদের মারের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ভয়ে পুরুষরা অনেকে বাড়িতে থাকতে পারছে না।”
অন্যদিকে রুমেলা বিবির অভিযোগ তার স্বামীকে মেরে চোখ নষ্ট করে দিয়েছে বিজেপির লোকজন। হেনা বিবি বলেন, “গ্রামের তামাল শেখকে প্রচণ্ড মেরেছে। তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওদের অত্যাচারে আমরা গ্রামের দোকানে যেতে পারছি না।”
ঘটনার পর গ্রামে নিরাপত্তার দাবিতে রামপুরহাট মহকুমা শাসকের অফিসে হাজির হন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভাশিস চৌধুরী। তাঁরা মহকুমা শাসকের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের অত্যাচারের বর্ণনা দেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মহকুমা শাসক জগন্নাথ ভড়। অশান্তি থামাতে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।