Birbhum Love Jihad
Share it

ভিন ধর্মে বিয়ে করায় গ্রাম ছাড়া এক নবদম্পতি। যুবকের পরিবারকেও গ্রামছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে নববধূর বাপের বাড়ির লোকজন ও গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের নলহাটি থানার শ্রীপুর গ্রামে। ঘরে ফিরতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমনকি প্রশাসনের সর্বস্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোন সুরাহা মেলেনি। ফলে আজও আত্মগোপনে রয়েছেন নবদম্পতি।

জানা গিয়েছে, নলহাটি থানার শ্রীপুর গ্রামের বিজন প্রামাণিক (নাম পরিবর্তিত) ও জাহানারা খাতুন (নাম পরিবর্তিত) একে অপরকে ভালোবাসতো। চলতি বছরের ২৫ জুন জাহানারা খাতুনকে বিয়ে করে বিজন প্রামাণিক। অভিযোগ বিয়ের পর থেকেই বিজন প্রামাণিকের বাড়িতে চড়াও হয় জাহানারা খাতুনের বাপের বাড়ির লোকজন ও গ্রামবাসীদের একাংশ। মারধরের পাশাপাশি বাড়ি ভাঙচুরও করা হয় বলে অভিযোগ। প্রাণ বাঁচাতে বিজন প্রামাণিক ও তাঁর পরিবারের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। আজও তারা বাড়িতে ফিরতে পারেনি। গ্রামে ফিরলে তাদের প্রানে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে নবদম্পতির দাবি। বিষয়টি জানিয়ে নলহাটি থানা থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েছে নবদম্পতি। কিন্তু আজও তারা গ্রামে ছেড়ে আত্মগোপন করে রয়েছে।

নববধূ বলেন, “আমি জাহানারা খাতুন। আইন মতে করে আমি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছি। এখন আমার নাম দিয়া প্রামাণিক (নাম পরিবর্তিত)। আমি সাবালিকা। সজ্ঞানে আমি গ্রামের বিজনকে বিয়ে করেছি। কিন্তু আমার বাপের বাড়ি আমাদের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। ফলে আমার পরিবার এবং গ্রামের একাংশ আমার শ্বশুরবাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর করেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে ঘরবাড়ি। আমরা প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, রাষ্ট্রপতিকেও। আমরা ঘরে ফিরতে চাই। শান্তিতে সংসার করতে চাই”।

বিজন প্রামাণিক বলেন, “আমি প্রশাসনের কাছে করজোড়ে আবেদন করছি আমাদের নিরাপত্তা দিয়ে গ্রামে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে যারা আমাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার করছে এবং প্রানে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক”।

নববধূর মা শ্যামলী বিবি (নাম পরিবর্তিত) বলেন, “মেয়ে ভিন ধর্মে বিয়ে করেছে। তাই আমরা ওই বিয়ে মেনে নেব না। ওই ছেলের পরিবারকেও কোনওমতে গ্রামে ঢুকতে দেব না”।

জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। মেয়েটির বাবাও একটি অভিযোগ থানায় করেছিল। সব বিষয় নিয়ে তদন্ত করছি। তবে কাউকে জোর করে গ্রামছাড়া করা যাবে না”।

Share it