Share it

বেহাল গ্রাম থেকে শহরে পৌঁছনোর সোজা রাস্তা। স্বেচ্ছাশ্রমে সেই রাস্তা মেরামতের (Road Repair) কাজে হাত লাগিয়েছেন গ্রামবাসীরা। ষষ্ঠীতে এসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে হাতে হাত লাগিয়ে রাস্তায় মাটি ফেললেন জামাইরাও। এমনই ছবি ধরা পড়েছে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ১ এবং রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের দুটি গ্রামের রাস্তা। যদিও রাস্তা নির্মাণ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।

ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের মল্লারপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালা গ্রামের স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র থেকে ১৪ নম্বর জাতীয় পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার মাটির রাস্তা তৈরি হয়েছিল কয়েক বছর আগেই। ওই রাস্তার ১০০ মিটার রয়েছে রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের কাষ্ঠগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। মাঝে রয়েছে ঘোড়ামারা নামে একটি কাঁদর। গোয়ালা, তেলডা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের সহজে রামপুরহাট পৌঁছতে ওই রাস্তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাস্তায় মোড়াম কিংবা পাথর ভাঙা গুঁড়ো না দেওয়ায় বর্ষায় রাস্তায় যাতায়াত করা যায় না। ফলে নিজেদের তাগিতে গ্রামের রাস্তা নির্মাণে দিন তিনেক আগে হাত লাগান গ্রামবাসীরা। স্বেচ্ছাশ্রমে জমির মাটি কেটে রাস্তায় ফেলতে শুরু করেন তাঁরা। বুধবার ছিল জামাইষষ্ঠী (JamaiShashthi)। এদিন শ্বশুর বাড়ি গিয়েছিলেন সাঁইথিয়ার জিতেন মুখোপাধ্যায়, রামপুরহাটের মিঠুন দাস, মুর্শিদাবাদের উমরপুরের সিদ্ধার্থ দাসরা। গ্রামবাসীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ফেলতে হাত লাগিয়েছিলেন তাঁরাও।

জিতেনবাবু বলেন, “এই রাস্তাটা নির্মাণ হলে আমাদের শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত খুব সহজ হয়। কারন মল্লারপুরে রেলগেট অধিকাংশ সময় দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে। ফলে রোগী নিয়ে রামপুরহাট শহর পৌঁছতে বহু সময় নষ্ট হয়। কিন্তু গ্রামের ভিতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ হলে খুব সহজেই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছে যাওয়া যাবে।”

গ্রামের বাসিন্দা বাহাদুর রুইদাস বলেন, “আমাদের রামপুরহাট যেতে হলে মল্লারপুর হয়ে ঘুর পথে যেতে হয়। কিন্তু রেলগেটে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অথচ গ্রামের ভিতর দিয়ে এই রাস্তা নির্মাণ হলে রামপুরহাট পৌঁছতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় কমে যাবে। তাই আমরা দিন তিনেক আগে নিজেরাই রাস্তা নির্মাণে হাত লাগাই। এদিন জামাইরাও আমাদের সঙ্গে হাত লাগিয়েছিলেন।”

গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চায়েত সদস্য BJP-র সন্তু বাগদি বলেন, “এই রাস্তা সম্পূর্ণভাবে নির্মাণ করতে গেলে ৭০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। ওই পরিমাণ টাকা পঞ্চায়েতের হাতে নেই। বিষয়টি আমরা বিডিও কে লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে কন সদুত্তর পায়নি। তাই গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ করছেন গ্রামবাসীরা।”

স্থানীয় বাসিন্দা, বীরভূম জেলা পরিষদের কো-মেন্টর ধীরেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের উন্নয়ন নিয়ে কোন অভিজ্ঞতা নেই। এরা উন্নয়নের টাকা খরচ করতে পারছে না। মানুষদের এদের নির্বাচিত করে এখন আপশোস করছে।”

যদিও পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সমীর লোহার বলেন, “ওই রাস্তা নির্মাণের ক্ষমতা পঞ্চায়েতের নেই। আমরা খুব জোর পাথর ভাঙ্গা গুঁড়ো কিংবা লাল মোড়াম ফেলতে পারি। ওই রাস্তার জন্য আমরা বিডিও-র কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে কোন সদুত্তর মেলেনি। আমার ওই রাস্তায় লাল মোড়াম ফেলে দেব।”

BDO গোরাচাঁদ বর্মণ বলেন, “পঞ্চায়েতের অনেক ফান্ড আছে। তার সেই ফান্ড থেকে লালা মোড়ামও তো ফেলতে পারে। কিন্তু তাঁরা করেনি। তাছাড়া পথশ্রী প্রকল্পেও ওই রাস্তা ঢোকান যেত। কিন্তু পঞ্চায়েত বিডিওকে বিষয়টি জানায়নি।”

Share it