যাত্রা উৎসবে অভিনেতা চপল ভাদুড়ী
Share it

নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া: পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা আকাদেমির আয়োজনে কলকাতায় শুরু হয়েছে ২৮তম যাত্রা উৎসব। ২৫ নভেম্বর এই উৎসবের দ্বিতীয় দিনে রবীন্দ্রসদন চত্বরে একতারা মুক্তমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট যাত্রাভিনেতা চপল ভাদুড়ী। সেখানেই তিনি নিউজ ওয়েভ ইন্ডিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলোচনা করলেন যাত্রা শিল্পের বিবর্তন নিয়ে। সেইসঙ্গে এই লোকশিল্পকে উৎসবের মর্যাদা দেওয়ায় রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন তিনি। এখানে তুলে ধরা হল তাঁর সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার –

প্রশ্ন: যাত্রার সেকাল-একাল নিয়ে আপনার মতামত ?
যাত্রার সেকাল সেকালেই আছে, কিন্তু আমরা একালে সেই সেকালকে ধরেই পড়ে আছি। কেননা যাত্রা তা না হলে উঠে যেত, যাত্রা থাকত না। যাত্রা কিন্তু সেকালে এবং একালেও যাত্রা আছে শুধু কাজের রকমফের। রকমফের বলতে যেটা বোঝায় এখন আমি যেটা দেখছি সামনে সেটা দেখে বুক ফেটে আমার কান্না আসছে আমরা যদি তখন এত ভালো সুযোগ পেতাম ! তখন তো এত পাইনি, আজ এত সমারোহ ! মাঠে যাত্রা করেছি আমরা, তবে সেগুলো খুব ভালো অ্যাকোমোডেড নয়। এই যে অ্যাকোমোডেশন এখন রয়েছে এটা একটা বিরাট ব্যাপার। এটা তো হবেণ। যেহেতু সবই পরিবর্তনশীল জগৎ, তাই সবই পরিবর্তন হয়েছে। আমার নিজেরও পরিবর্তন হয়েছে। যাত্রায় পুরুষ থেকে মহিলা চরিত্রের অভিনেতা ছিলাম। কিন্তু আজ আমার ৮৪ বছর বয়স। এখন আর অভিনয় করি না। যাত্রা থিয়েটার সবই ছেড়ে দিয়েছি।

তবে যাত্রার সেকাল বলতে আজ আর কিছুই নেই। মালিক থেকে ম্যানেজার, শিল্পী, মহিলা শিল্পী অনেকেই তো এখন আর নেই। তাঁদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়েছিল সেকালের যাত্রা। কিন্তু সেকালের সঙ্গে একালের একটা তফাৎ থেকেই যায়। বহুলোকই আছেন তুলনা করেন ! কিন্তু তুলনা করলে চলবে না। একালেরটা মেনে নিতেই হবে। আজকের যে সমাজ, আজকের যে যুগ, একালের যে যুগ সেই অনুযায়ী এই যাত্রাকে সেই যাত্রায় পরিণত করতে হবে। তাই একালের যাত্রা ঠিকই আছে। সেকালের যাত্রা তখনকার যুগ অনুযায়ী যা কিছু ছিল তখনকার মতো হয়েছে।

প্রশ্ন: এখানকার অভিনয়ে কী আগের মতো আবেগ আছে, বা এক্ষেত্রে অভিনয়ের কি কোনও উন্নতি প্রয়োজন আছে ?
এখন তো পরিবর্তন এসে গেছে। আমাদের আরও আগে যাঁরা ছিলেন তাঁরা অত্যন্ত সুরে অভিনয় করতেন। কিন্তু আমরা সুরে অভিনয় করিনি। এই যে কলোকয়্যাল কথা বলছি এটাই, এর থেকে আরও কলোকয়্যাল হয়েছে এখনকার যাত্রা। কিন্তু যেহেতু যাত্রা, যাত্রার একটু ছোঁয়াচ, মানে মাছ ধুলে হাতে যেরকম একটু গন্ধ থাকে সেরকমই একটু গন্ধ রাখতে হয় বইকি।

প্রশ্ন: রাজ্য সরকারের তরফে আপনি “শান্তিগোপাল-তপন কুমার পুরস্কার”-প্রাপ্ত, কেমন অভিজ্ঞতা ?

যাত্রায় মমতা দি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন, অনেক অনেক…অনেক কিছু পেয়েছি এই যাত্রা থেকে। যাত্রায় বঙ্গভূষণ থেকে আর আরম্ভ করে, শ্রেষ্ঠ নারী চরিত্র হিসেবে উপহার হিসেবে স্বীকৃতি এবং সবকিছু, মমতা অনেক করেছেন, কৃতজ্ঞ তাঁর কাছে।

Share it